Advertisment

'ভোট শেষেই দরজা খুলব-দেখি কে কে আসেন', আসানসোলের প্রচারে কল্যাণের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন অভিষেক

শাসক দলের অন্দরের সমীকরণে কল্যাণ-অভিষেকের পাশাপাশি থাকা রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
abhishek banerjee kalyan banerjee togather in asansol tmc campaign road show

আসানসোলের প্রচারে একসঙ্গে অভিষেক ও কল্যাণ।

নেতৃত্বের প্রশ্নে দলের নবীন, প্রবীণ দুই সাংসদের বাকযুদ্ধে আড়াআড়ি চিড় ধরা পড়েছিল জোড়া-ফুল শিবিরে। ফাটল এতটাই গভীরে পৌঁছেছিল ছিল যে শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ঢেলে সাজানো হয়েছে সংগঠনের পদাধিকারীদের। তারপর প্রকাশ্যে এ নিয়ে তৃণমূলের আর কেউ কোনও টু শব্দটি করেনি। সেই বিতর্কের পর শনিবার আসানসোলের প্রচারে একসঙ্গে দেখা গেল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেককে। উপনির্বাচনের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে প্রচার করলেন তাঁরা। শাসক দলের অন্দরের সমীকরণে কল্যাণ-অভিষেকের পাশাপাশি থাকা রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisment

এ দিন উষাগ্রাম থেকে জিটি রোড পর্যন্ত দীর্ঘপথ নজরকাড়া প্রচার করেন তৃণমূল। তবে, সবকিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে কল্যাণ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রচার। ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঐক্যবদ্ধ তৃণমূলের বার্তা। কিন্তু দুই তৃণমূল সাংসদের কথা হল কী? তা নিয়েই চরম জল্পনা।

করোনা মোকাবিলায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি 'ডায়মন্ড হারবার মডেল'কে কটাক্ষ করেছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতৃত্বের প্রশ্নে তৃণমূলের অন্দরের যখন বিকল্প শিবিরের জল্পনা তুঙ্গে, তখনই মমতা ছাড়া তিনি যে অন্য কাউকে মানতে নারাজ সে কথাও খোলাখুলি বলেছিলেন কল্যাণবাবু। দাবি করেছিলেন যে, গোয়ার নির্বাচনের ফলাফলই বুঝিয়ে দেবে নেতৃত্ব হিসাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কতটা যোগ্য।

সেই সময়ই দলের মদ্যে থেকেই তীব্র প্রতিবাদ ধেয়ে আসে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। জোড়া-ফুলের অন্দরের সমীকরণে যাঁরা অভিষেক অনুগামী বলে পরিচিত (মূলত তৃণমূলের যুব নেতৃত্ব) তাঁরা সোশাল মিডিয়ায় শ্রীরামপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে সরব হয়। 'শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়'- মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট ভাইরাল হয়। দুই সাংসদের রেষারেষিতে অস্বস্তি বাড়ে রাজ্যের শাসক শিবিরে।

এরপর অবশ্য গোয়ায় বসে অভিষেক বলেছিলেন যে, 'কল্যাণবাবু ঠিকই বলেছেন। উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড় নেতৃত্ব হিসাবে কাউকে মানেন না। আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে মানি না।' শেষ পর্যন্ত দলনেত্রীর বৈঠকে উচাটনে প্রকাশ্যে ইতি পড়েছিল। কিন্তু, চাপা আগুন কতটা ধিকি ধিকি জ্বলছিল তা আঁচ মিলছিল না। এ দিনের কল্যাণ-অভিষেকের একসঙ্গে প্রচারে অবশ্য তার প্রকাশ্যে উত্তর মিলল। তবে, জানা গিয়েছে, প্রচারমঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ালেও কত হয়নি এই দুই সাংসদের।

অন্যদিকে, আসানসোলে শনিবাসরীয় প্রচার থেকে বিজেপি ও কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন অভিষেক। বলেন, 'পেট্রল, ডিজেলের দাম বাডড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষ নাজেহাল। এর প্রতিবাদ করতেই হবে। এবার ভোট টু ইলেক্ট নয়। এবার ভোট টু প্রটেস্ট।'

তৃণমূল নেত্রীর দাবি, অবস্থা যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে শ্রীলঙ্কার মতো ভারতেও জরুরী অবস্থা জারি করতে হবে। সেই সুর বজায় ছিল তৃণমূলের সর্বাভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যেও। তাঁর কথায়, 'শ্রীলঙ্কার থেকে ভারতের অবস্থা ২০ গুণ খারাপ। ৬৭ বছরে ভারতের ঋণের পরিমান ৫৪ লক্ষ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদী ৭ বছরে দেনা করেছে ১০২ লক্ষ কোটি টাকা।'

তৃণমূলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তের প্রতিবাদ করেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েই অভিষেক গেরুয়া শিবির থেকে তৃণমূলে ফেরার জন্য লকগেট খোলার কথা তোলেন। বলেন, ' আসানসোলে জোড়াফুল ফুটবে। ১৬ তারিখ পদ্মফুল চোখে সর্ষেফুল ফুটবে। আবার ভোট শেষেই ভোট শেষেই দরজা খুলব, দেখি কারা কারা আসেন। ২০১৪, ১৯-য়ে আমরা আসানসোলে জিততে পারিনি। এবার সুযোগ এসেছে। কোনও মতেই হাতছাড়া করা চলবে না।'

tmc asansol abhishek banerjee Kalyan Banerjee
Advertisment