ভোটের দিন নেতা, কর্মীদের 'দাদাগিরি' করা চলবে না। শান্তিপূর্ণ ও অবাধে ভোট করাতে হবে। ফের একবার দলীয় নেতা, কর্মীদের সজাগ করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের হুঁশিয়ারি, 'দলকে কলুষিত করলে যে যত বড় নেতার ছত্রছায়াতেই থাকুক না কেন দল তাকে রেয়াত করবে না।' একই সঙ্গে তাঁর সতর্কবাণী, 'পাঁচ-সাতটা ওয়ার্ডে খবর রয়েছে যে, বিরোধিরা গন্ডগোল পাকিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে চালাতে চাইবে। কলকাতায় ভোট হচ্ছে না তা দেখানোর চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক হতে হবে।'
শুক্রবার ছিল কলকাতা পুরসভা ভোটের প্রচারের শেষ দিন। অন্তিম প্রহরে তৃণমূল গড় দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ থেকে কালীঘাট পর্যন্ত রোড শো করেন অভিষেক। সেখানেই তিনি বলেন, 'গত ১০ বছরের কলকাতার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তাই কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দেওয়ার আহ্বান করব।' বলেন, 'কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস কুমার বা মালা রায়, যাকেই ভোট দিন তা আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই জমা হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- ছোট লালবাড়ির লড়াইয়ের আগে স্বস্তিতে তৃণমূল, ময়দানে বাম-কংগ্রেসও
পুরনিগম ভোটে দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি আসনে গতবার বিজেপি জিতেছিল। তবে বিধানসভা ভোটের নিরিখে অ্যাডভানটেড তৃণমূল। এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিষেকের আর্জি, 'এখান থেকে দু-একটা বিজেপির আবর্জনাকে দূর করে দিন।' কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ের খতিয়ানও দেন তিনি।
এরপরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হুঁশিয়ারি, 'শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন করতে হবে। দাদাগিরি চলবে না।' পাশাপাশি দলের নেতা, কর্মীদের সতর্কও করে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'পাঁচ-সাতটা ওয়ার্ডে খবর রয়েছে যে, বিরোধিরা গন্ডগোল পাকিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে চালাতে চাইবে। কিছু দেখলেই পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। কলকাতায় ভোট হচ্ছে না তা দেখানোর চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক হতে হবে। দল কলুষিত হয় এমন কোনও কাজ করা যাবে না। আসলে পায়ের তলার জমি নেই, তাই এসব করেই নিজেদের হারকে দেখাতে চাইবে ওরা।'
আরও পড়ুন- ‘যুবরাজের’ নিপুণ কৌশল, কলকাতার ভোটে চাপ বাড়ল বিজেপির
অভিষেকের দাবি, শান্তিপূর্ণ ভোট হলে ১৩২টির কম আসন তৃণমূলের পাওয়ার কথা নয়। ৯৫ শতাংশ আসনে জিতবেন শাসক দলের প্রার্থীরা।
অনুব্রতদের দিয়ে শুরু, তারপর মমতা থেকে অভিষেক- সকলেই গত পঞ্চায়েত ভোটের প্রেক্ষিতে ভোটে অবাধ ও সুষ্ঠু করার কথা বলছেন। সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধিরা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, একুশে ব্যাপক সমর্থন পুঁজি করেই ক্ষমতায় ফিরেছে জোড়া-ফুল। সেই রেশ পরের ২ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট ও ৫টি উপনির্বাচনেও বজায় ছিল। জনসমর্থনকে হাতিয়ার করেই তাই এবার ফের শক্তি প্রমাণের স্বপ্নে বিভোর রাজ্যের শাসক শিবির। তাই কর্মীদের পই-পই করে ভোটের দিন 'দাদাগিরি' বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন