'দাদা' ফুল বদলেছেন। কিন্তু, তাঁর কিছু অনুগামী এখনও তৃণমূল কর্মী সেজে শাসক দলে রয়ে গিয়েছে। শনিবার হলদিয়ায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সমাবেশে এই দাবি করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় আসার পথে এই ধরণের বেশ কয়েকজন অনুগামীকে তিনি চিহ্নিত করেছেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক হিসাবে চিহ্নিত হলদিয়া। সেখানে দাঁড়িয়েই নাম না করে এ দিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে বিঁধেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'কে অনুগামী সেজে দলের ভিতরে ঢুকে দলের বারোটা বাজাচ্ছে আমি জানি। মিটিংয়ে আসার পথে বেশ কয়েকজন অনুগামীকে দেখেছি। ৪-৫ জনকে চিহ্নিতও করেছি।'
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনুগামীদের তৃণমূলে থাকার বলে অভিষেক বোঝাতে চেয়েছেন যে, তৃণমূলকে ভাঙাতে ব্যর্থ শুভেন্দু অধিকারী। উল্টে বঙ্গ বিজেপিতেই ভাঙন বাড়ছে। এই অবস্থায় জোড়া-ফুলে বেশ কিছু বিভিষণকে ঢুকিয়ে শাসক দলের ক্ষতি করতে মরিয়া গেরুয়া নেতৃত্ব। সেই কৌশল আর কাজে দেবে না বলে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
পাশাপাশি অভিষেক বলেছেন যে, 'তৃণমূল দরজা খুললে বাংলা থেকে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে।'
কয়লা পাচারকাণ্ডে তদন্ত করছে ইডি, সিবিআই। দুবার অভিষেক গিয়ে দিল্লির সিবিআই দফতরে হাজিরাও দিয়েছেন। জেরা চলেছে তাঁর।ষ এরপর আদালতের রায়ে স্বস্তিতে তিনি। আদালতের নির্দেশ, কলকাতায় গিয়েই ওই মামলায় সাক্ষী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীকে জেরা করতে হবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। যা নিয়ে এ দিন বিজেপিতে তোপ দেগেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। বলেছেন, 'মেদিনীপুরকে দিল্লির কাছে বিক্রি করেছে এই জেলার স্বঘোষিত সর্বেসর্বা। ইডি-সিবিআই-র ভয়ে বিজেপির তল্পিবাহক হয়েছেন। আর কিছু হলেই সিবিআই লেলিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু, ওরা আমাকে দু'বার ডেকেছিল। পাল্টা আমাদের কাছে ওদের দু'জন সাংসদ চেল এসেছেন।'
হলদিয়া পৌরসভায় ডেভালপমেন্ট ট্যাক্স নিয়েও এদিন সরব হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঅ ট্যাক্স আর নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'হলদিয়া পৌরসভার সব দুর্নীতির অভিযোগের অডিট হবে। ডেভালপমেন্ট ট্যাক্সের নামে দুর্নীতির সব প্রমাণ রয়েছে।'
এচাড়াও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হুঁশিয়ারি, 'হয় ঠিকাদারি করুন নয় তৃণমূল, দুটো এক সঙ্গে করতে হবে না। কোনও দাদার প্রতিনিধি নয়, নেত্রীর প্রতিনিধি হতে হবে। শ্রমিক সংগঠন করলে খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হতে হবে।'
দলের আদি নেতা, কর্মীদের আশ্বস্ত করতে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, 'আগামী ভোটে দলবদলুরা টিকিট পাবেন না। যাঁরা প্রথম থেকে তৃণমূল করে, তাঁরাই টিকিট পাবে, মানুষের দাবি নিয়ে নেতারা পথে নামুন। ১০০ দিন সময় দিন, একটাও ঠিকাদার থাকবে না।'