স্বস্তি অভিষেকের। ইডির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তৃণমূল সাংসদের আর্জি মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ, চিকিৎসার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুবাইতে যেতে আর কোনও বাধা নেই।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বিদেশ যাত্রার আবেদন নাকচ করেছিল ইডি। সেই নির্দেশের উপরই স্থগিতাশ চেয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। আজ দুপুরেই সেই মামলার শুনানি ছিল।
গরুপাচার কাণ্ডে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই মামলায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন অন্যতম সাক্ষী। ইতিমধ্যেই গোয়েন্দারের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। অভিষেক দাবি, আগামী ৩ থেকে ১০ জুন চোখের চিকিৎসা করাতে দুবাই যাবেন তিনি। তাই এই সময়কালের মধ্যে যেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব না করে ইডি। এই মর্মেই ইডি-র কাছে চিঠি দিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
কিন্তু, অভিষেকের আর্জিতে আপত্তি জানায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাঁর বিদেশযাত্রার আবেদন নাকচ করা হয়। এরপরই ইডির আপত্তির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক। তাঁর বিদেশযাত্রায় ইডির নিষেধাজ্ঞার উপর স্থগিতাদেশ জারির জন্য আবেদন করেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।
আরও পড়ুন- ‘কলকাতা ছেড়ে ভাইপোর চিকিৎসা কেন দুবাইয়ে?’, গরম প্রশ্নে তুলকালাম অনুপমের
এ দিনের শুনানিতে ইডির আইনজীবী এম ভি রাজু হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে আশঙ্কার কথা শোনান। জানান যে, গরুপাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত ফেরার বিনয় মিশ্র বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে অভিষেকের যোগাযোগ ভালই। অতীতে তাঁরা বিদেশযাত্রাও করেছেন। ইডির আইনজীবীর প্রশ্ন, কেন ভারতের সেরা চোক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দুবাইতে তৃণমূল সাংসদকে চিকিৎসা করাতে যেতে হচ্ছে? এছাড়া, সাংসদ দুবাইতে কোথায়, কতদিনের জন্য যাবেন, কোথায় থাকবেন তারও কোনও খবর নেই।
জবাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সপ্তাংশু বসু জানান, তদন্তে সব দরণের সহযোগিতা করছেন সাংসদ। চিকিৎসা করাতে যে যেখানে খুশি যেতে পারেন, এতে আপত্তি থাকতে পারে না।
সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী বলেন, 'দুবাই থেকে অভিষেক অন্য কোথাও যেতে পারেন ইডির এই শঙ্কা কার্যত ভিত্তিহীন। কে কোথায় চিকিৎসা করাবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। সাংসদের সঙ্গে একজনকে দুবাইতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে ইডির অপত্তি থাকতে পারেন না।'
এরপরই অভিষেক তাঁর স্ত্রীকে রুজিরাকে নিয়ে দুবাইয়ে যেতে পারেন বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
৫ বছর ৮ মাস আগে, অর্থাৎ ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর বহরমপুর থেকে দলীয় কর্মসূচি সেরে কলকাতায় ফেরার পথে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুর্ঘটনাতেই তাঁর বাঁ চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছিল। এরপর লকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অভিষেকের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। অভিষেকের এই আঘাতকে 'ষড়যন্ত্র' বলে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।