তাঁকে নিয়েই তোলপাড় রাজ্য। এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ায় তাঁকে নিয়ে উৎকন্ঠায় গোটা বাংলা। তাঁর জন্যই আন্দোলনে নেমেছে এ রাজ্যের তামাম চিকিৎসক মহল। অথচ এনআরএস হাসপাতালের সেই জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের নামই মনে করতে পারলেন না তৃণমূল সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরএসকাণ্ডের প্রতিবাদে ডাক্তারদের কর্মবিরতির প্রসঙ্গে পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের নাম বলতে গিয়ে এদিন কার্যত ‘হোঁচট’ খেলেন অভিষেক। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এনআরআস প্রসঙ্গে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি বলেন, ‘‘একজন বোধহয় যশ (পড়ুন, যশ টেকওয়ানি), পুরো নামটা জানি না আরেক জন, কী নাম ওঁর? প্রতিভা মুখোপাধ্যায়? পরিভা?’’ এভাবেই 'হোঁচট' খান অভিষেক। এরপরই পাশ থেকে পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের নাম বলে দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি তা উচ্চারণ করে উঠতে পারেন না। অভিষেক বলেন, ‘‘ডাক্তার পরিভা মুখোপাধ্যায়। ওদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, কোনওভাবেই তা সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা ধিক্কার জানাই। শুধু দলের তরফে নয়, একজন দেশের নাগরিক, বঙ্গবাসী হিসেবে নিন্দা জানাচ্ছি...ওঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি’’।
আরও পড়ুন: ‘বন্ধ’ এনআরএস, প্রতিবাদের আঁচ অন্য হাসপাতালেও, রাজ্যজুড়ে রোগীদের হাহাকার
অন্যদিকে, ডাক্তারদের কর্মবিরতি ইস্যু প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। অপারেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য গিয়েছিলেন। আজও বৈঠক করেছেন। সব দাবি শুনে রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা করবে...সবাইকে অনুরোধ করছি, রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রাখুন। এই নৈরাজ্যের অবসান আমরা সকলে চাই’’। অভিষেক আরও বলেন, এই কর্মবিরতির ফলে যদি রোগী মৃত্যু ঘটে, সে ক্ষেত্রে সেই দায়ও বর্তাবে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উপরই। এই রোগী মৃত্যুর ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতির রঙ চড়ানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার মুকুল রায় দাবি করেন, তৃণমূলের নেতৃত্বেই এনআরএসকাণ্ড ঘটেছে। রাজ্যের সরকার একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে আড়াল করতে চাইছে বলেও তোপ দাগেন একদা তৃণমূলের অঘোষিত দু'নম্বর তথা অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
আরও পড়ুন: নীলরতনের ঢেউ জাতীয় স্তরে, রাজ্যের ডাক্তারদের পাশে আইএমএ
প্রসঙ্গত, নীলরতন সরকার হাসপাতালে রোগী মৃত্যুকে ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্যের চিকিৎসক মহল। সোমবার রাতে অশীতিপর মহম্মদ সঈদের মৃত্যু হয়। পরিজনদের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতিতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরপরই জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয়। রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে অমানবিক আক্রমণের অভিযোগ ওঠে। এই মুহূর্তে কলকাতারই এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। আরেক প্রহৃত চিকিৎসক যশ টেকওয়ানিও এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন। জুনিয়র চিকিৎসকদের নিগ্রহের প্রতিবাদে বুধবার ১২ ঘণ্টার আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া রাজ্যের ডক্টর্স ফোরাম।