মমতার পর বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী অভিষেকই। দলের দায়িত্বও বর্তাবে তাঁর কাঁধেই। তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তির সময় যা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তারপর সেই তালিকায় একে একে শামিল হয়েছিলেন অপরূপা পোদ্দার, মদন মিত্ররা। যা নিয়ে রাজ্য রাজ্যনীতি, এমনকী জোড়া-ফুলের অন্দরেও কম চর্চা চলেনি। এবার এই প্রসঙ্গেই নিজের মতামত জানালেন খোদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার অসমে দলীয় কার্যালয়ের উদ্ধোধন করেন অভিষেক। উত্তরপূর্বের এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে উৎখাতের ডাক দেন। দেশের শাসকের আসন থেকে গেরুয়া দলটিকে হঠাতে লোকসভায় অসমের নেতা, কর্মীদের সামনে লক্ষ্য স্থির করে দেন তিনি। এনআরসি, সিএএ-কে কালা আইন বলে তোপ দাগেন অভিষেক। সাফ জানিয়ে দেন, শুরু থেকেই এই আইনের প্রতিবাদে মুখর তৃণমূল। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
সাংবাদিক বৈঠকে ওঠে জোড়া-ফুলের উত্তরাধিকার বিতর্কের কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সত্যি কী তিনিই দলের দায়িত্বে আসবেন? বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে? জবাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমকে দল সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি চাই দলকে বাংলায় শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাবো। একাধিক রাজ্যে, অন্তত ১০টি রাজ্যে সংগঠন যাতে বিস্তার করতে পারে সেটাও দেখবো। সেই কাজই করছি। আমাদের সকলের মাথার উপর রয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা উনি যেন আরও বহু বছর সুস্ত থাকেন। ওনার নেতৃত্বেই যাতে ভরাত আগামীতে পথ দেখে সেটাই চাইবো। যে যা বলছেন সেটা তাঁর বা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত বা মন্তব্য। আমি এটাকে সম্মান করছি। এনিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।'
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূলে আকছাআকছি পরিস্থিতি প্রকট হয়েছিল। দলের অন্দরে মমতা ও অভিষেকপন্থী নেতা, কর্মীদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। এরপরই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পথ রেখে অন্য সব পদ বাতিল করে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মনে করা হয়, দলের বিবাদ সামলাতেই কড়া পদক্ষেপ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল পরিচালনায় গড়া হয় কর্মসমিতি। পাল্টানো হয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির মাথাও।
বিতর্কের মাঝেই গোয়ায় বসে অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তাঁর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মমতার নেতৃত্বেই তিনি কাজ করবেন। এবারও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নে নেত্রীর প্রতিই আনুগত্য প্রকাশ করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁকে দলের পরবর্তী প্রধান ও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ভবিষ্যদ্বানী এবং তাঁদের মতামতকে ব্যক্তিগত বলে কৌশলে বিতর্ক জিইয়ে রাখলেন খোদ অভিষেকই।