এক সপ্তাহ পরে সংগঠনে ফের পদ ফিরে পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে আবারও সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে অভিষেককেই বেছে নিয়েছেন চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়া ২০ জনের যে কর্মসমিতি গত শনিবার গঠিত হয়েছিল, তাঁদের অধিকাংশকেই এদিন দলের শীর্ষ পদ বন্টন করা হয়েছে। এই ২০ জনকে নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যার গ্রুপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। দল পরিচালনায় বিভিন্ন বিষয় এই গ্রুপে আদান-প্রদান হবে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।
একনজরে সর্বভারতীয় তৃণমূলের কোন পদে কে?
সহ-সভাপতি- যশবন্ত সিনহা
সুব্রত বক্সি
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য
কোষাধক্ষ- অরূপ বিশ্বাস
সাধারণ সম্পাদক- অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
সমন্বয়কারী- ফিরহাদ হাকিম
অর্থ ও বৈদেশিক নীতি- যশবন্ত সিনহা
অমিত মিত্র
জাতীয় মুখপাত্র- সুখেন্দু শেখর রায়
ডাঃ কাকলী ঘোষদস্তিদার
মহুয়া মৈত্র
উত্তর-পূর্ব রাজ্য দেখবেন- সুস্মিতা দেব
মুকুল সাংমা
সুবল ভৌমিক
হরিয়ানা- অশোক তানওয়ার
নেতৃত্বের প্রশ্নে তৃণমূলের অন্তরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যা ক্রমশ প্রকট হতে থাকে। তারপরই গত শনিবার দলে শীর্ষ পদাধিকারীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন তৃণমূল নেত্রী। ওই বৈঠকেই চেয়ারপার্সন (তৃণণূলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ই) বাদে দলের বাকি সব পদ বাতিল করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল পরিচালনায় গঠন করা হয় ২০ জনের জাতীয় কর্মসমিতি। তাহলে কী জোড়া-ফুলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড' থাকবে না অভিষেক? শুরু হয় জোর জল্পনা।
সংগঠনে একটি নয়, একাধিক সাধারণ সম্পাদক পদ তৈরি করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব কমানো হতে পারে বলে নানা খবর সামনে আসতে থাকে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত অভিষেকেই আস্থা রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁকেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হল। শুক্রবার কালীঘাটে মমতার নেতৃত্বে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পর এই ঘোষণা করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পাশাপাশি সর্বভারতীয়স্তরে ঘাস-ফুলের সংগঠনে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সহ-সভাপতি করা হল, এনডিএ আমলের কেন্দ্রীয়মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত বক্সি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। কোষাধক্ষ করা হল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে।
আরও পড়ুন- কালীঘাটে গিয়ে মিলল ‘দিদির আশীর্বাদ’, বিধাননগরে মেয়র কৃষ্ণা, চেয়ারম্যান সব্যসাচী
জাতীয়স্তরে সমন্বয়কারীর ভূমিকায় থাকবেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অর্থাৎ, দলে ফিরহাদ হাকিমের গুরুত্ব আরও বাড়ল।
বাজপেয়ী আমলে দেশের অর্থ ও বিদেশমন্ত্রকের মন্ত্রী ছিলেন যশবন্ত সিনহা। তৃণমূলে সর্বভারতীয়স্তরের রাজনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন। যোগ্যসঙ্গতের জন্য যশবন্ত সিনহার সঙ্গে দলের অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারক কমিটিতে রাখা হয়েছে রাজ্যের ১০ বছরের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে।
দিল্লির দলীয় দফতর নিয়মিত খুলতে হবে বলে এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'জাতীয় মুখপাত্রের কাজ সামলাবেন সুখেন্দু শেখর রায়। সংসদ চালাকালীন রাজ্যসভার কথা শুখেন্দপ শেখর রায় ও লোকসভার কথা ডাঃ কাকলী ঘোষ দস্তিদার বলবেন। দিল্লির দফতরে নিয়মিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন এই দু'জন ছাড়াও সাংসদ মহুয়া মৈত্র।'
এছাড়া, উত্তর-পূর্ব রাজ্য দেখবেন রাজ্যসভার সুস্মিতা দেব, মেঘালয়ের মুকুল সাংমা ও ত্রিপুরার সুবল ভৌমিক। অশোক তানওয়ার হরিয়ানার দায়িত্বে।
'এক ব্যক্তি এক পদ' কার্যকরের ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু, কলকাতা পুনিগম ভোটে সেই নীতি থেকে সরে আসে রাজ্যের শাসক শিবির। আগানী ১০৮ টি পুরভোটে কোনও বিধায়ককে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। কিন্তু, সংগঠনের পদ বিন্যাসে প্রশ্নের মুখে 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি।