'বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে ভুল হবে না'। গত শনিবারই এক টিভি সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করে এ রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরই রাজ্য রাজনীতিতে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর শুরু হয়। ওই মন্তব্যের জন্য সোমবার শাহের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির বিষয়টিকে তিনি 'বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যহত করার প্রচেষ্টা' বলে অভিযোগ করেছেন। পুরো বিষয়টিকে ভোটকে মাথায় রেখে বিজেপির জঘন্য প্রচার বলে দাবি তাঁর।
এ দিন টুইটে ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, 'আমনার এত সাহস যে আমাদের (পশ্চিমবঙ্গ) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করতে আপনি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুমকি দিচ্ছেন। বাংলা এই নাটক প্রত্যাখ্য়ান করবে।'
পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি বহু দিনের ৷ সম্প্রতি বিজেপি নেতা-কর্মীদের খুন সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি তুলেছেন বাংলার বিজেপি নেতারা৷ বাংলার বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতাদের রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের এই দাবি কতটা সঙ্গত? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘বিরোধী রাজনৈতিক দল দাবি করতেই পারে। কিন্তু, রাষ্ট্রপতি শাসন কোনও রাজনৈতিক দলের নেতার দাবি মেনে হয় না ৷ ভারতীয় সংবিধানে যে নিয়ম রয়েছে তা নিয়ম মেনেই একমাত্র রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয় ৷ কোথাও রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে গেলে আগে রাজ্যপালের রিপোর্ট দেখতে হবে ৷ সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে, তারপর রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। তবে, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের মত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি রয়েছে।’
এই প্রেক্ষাপটেই তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে শাহ বলেছিলেন, ‘বাংলায় প্রত্যেক জেলায় শুধু বোমা তৈরির কারখানা তৈরি হয়েছে ৷ দুর্নীতি চরমে ৷ গোটা রাজ্যে পরিস্থিতি সাংঘাতিক খারাপ ৷ যেভাবে বিপক্ষের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে, অন্য কোথাও এমন ঘটনা ঘটে না ৷ তবু আমরা নিজেদের লড়াই থেকে পিছনে হটব না এবং ভোটে জয়ী হব৷’
বাংলা বোমা তৈরির কারখানা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবির চরম বিরোধিতা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'অদ্ভুত যে অমিত শাহ বালার বোমা ফ্যাক্টরিগুলির তথ্য খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে তথ্যের প্রশ্নে বিজেপি সরকার পুরোপুরি নির্বিকার!'
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা ভোট। তার আগে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জল্পনা উস্কে দেওয়া ও তার বিরুদ্ধে বিষোদগার- রাজ্য রাজনীতিতে নয়া তরজার ইন্ধন জোগাল।