আগামী ২১ জুন তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির বর্ধিত সভায় হাজির নাও থাকতে পারেন তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ওই সভায় মূলত মে মাসের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন হবে। সূত্রের খবর, গত ১২ জুন হায়দ্রাবাদে অভিষেকের বাঁ দিকের চোখে ফের অস্ত্রোপচার হয়েছে। সেই কারণে বিশ্রামে থাকার কথা দলের যুবরাজের। সেক্ষেত্রে নেতাজী ইন্ডোরে দলের কোর কমিটির সভা অনেকটাই গুরুত্ব হারাতে পারে।
ওই সভায় বেশ কিছু দলীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কথা রয়েছে। বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে দল পরাজিত হয়েছে, সেই সব এলাকা কী ভাবে পুনরুদ্ধার করা যাবে সে বিষয়ে উপদেশ দেবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পাশাপাশি যেখানে দল ভাল ফল করেছে তা ধরে রাখার নির্দেশ দেবে দল। কারণ সামনেই লোকসভার ভোট। এই রাজ্য় থেকে আসন কমে গেল সর্বভারতীয় স্তরে দর কমে যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের।
আরও পড়ুন: মাওবাদী সন্ত্রাসের দুঃসময় ফেরাচ্ছে তৃণমূল: দিলীপ ঘোষ
সূত্রের খবর, দলের বিক্ষুব্ধ এবং জয়ী নির্দলদের দলে ফিরিয়ে নিতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। যে সব নেতা বা কর্মী বসে গিয়েছেন তাঁদেরও সসম্মানে ফেরাতে চায় দল। জনসংযোগ কমে যাওয়া পরাজয়ের অন্য়তম কারণ বলে মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ। সেক্ষেত্রে ২১ তারিখ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের গরহাজিরায় অনেক সিদ্ধান্ত আটকে যেতে পারে। নেতৃত্বের একাংশের মতে, এই মুহূর্তে দলের যে কোনও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাঁরও একটা ভূমিকা থাকে।
অন্য়দিকে জঙ্গলমহলের আসন নিশ্চিত করাই এখন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে সবচেয়ে বড় চ্য়ালেঞ্জ। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই সংগঠনের হাল ফেরাতে ছুটছেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম। দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়-সহ অনেকেই গিয়েছেন সেখানে। রবিবার পুরুলিয়া যাচ্ছেন প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। সঙ্গে থাকবেন অভিনেতা সোহম। সম্প্রতি পেট্রো-পণ্য়ের মূল্য়বৃদ্ধির বিরুদ্ধে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মিছিলের দিন মদন মিত্রের ভূমিকা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পুরুলিয়ার বলরামপুরে দলীয় সভায় বক্তব্য় রাখবেন দলের প্রাক্তন যুব সভাপতি।
আরও পড়ুন: Purulia Update: জোড়া মৃত্যু নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর
জঙ্গলমহলের পদ্মকাঁটা ছাড়ানো যে খুব সহজ নয় তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত ভোটে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ঘাসফুলকে সরিয়ে পদ্মফুল ফুটেছে। সেখানকার একাংশ যে শাসকদলের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন তা মেনে নিয়েছে দল। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বক্তব্য়, "অনেক জায়গায় জনসংযোগের অভাব ছিল জঙ্গলমহলে। পাশাপাশি বিজেপি অর্থ ঢেলেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে।" শুক্রবার ঝাড়গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মহাসচিব।
এদিকে আবার দলের একাংশ মনে করছে, জনৈক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ভূমিকা থাকতে পারে দলের এই হালের পিছনে। মদন মিত্র জঙ্গলমহলে সভা করছেন অথচ ওই নেতাকে সেখানে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই যুব নেতা। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন তাঁকে নির্বাচনেও জঙ্গলমহলের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এই অন্তর্ঘাতের ফল শেষমেশ কী দাঁড়াবে, সেটা ভবিষ্যতের পক্ষে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।