বিজেপি ও সংঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের জের। সিলেবাস সংক্রান্ত বিতর্কে পিছু হটল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর ওই নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ইংরেজি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সমাজতত্ত্বের সিলেবাসে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) এবং বিজেপি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিভ টিচার্স ফ্রন্ট (এনডিটিএফ) প্রস্তাবিত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সরব হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের (এসি) পক্ষ থেকে ইংরেজি এবং ইতিহাস বিভাগকে বলা হয়েছে, আরও একবার বিষয়টি খতিয়ে দেখে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সমাজতত্ত্বের ক্ষেত্রেও প্রাথমিক ভাবে একই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পরে কিছু সংশোধনী-সহ প্রস্তাবিত সিলেবাস গৃহীত হয়।
এবিভিপি এবং এনডিটিএফের অভিযোগ, প্রস্তাবিত সিলেবাসে হিন্দু দেবদেবীদের বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বজরং দল-সহ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি, বামপন্থী মতাদর্শ, বিশেষত কমিউনিজম ও নকশালপন্থাকে গৌরবান্বিত করার চেষ্টা হয়েছে। অথচ, গোটা সিলেবাসে বৈদিক যুগের কোনও উল্লেখ নেই! এনডিটিএফের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইংরেজি সিলেবাসের একটি টেক্সটে গুজরাট দাঙ্গার প্রেক্ষিতে আরএসস-কে খুনি হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন, ব্যাকফুটে মুকুল, বিজেপিতে দিলীপই শেষ কথা
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য তথা এনডিটিএফ নেতা রাসেল সিং জানান, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ভাবে মুজফফরনগর দাঙ্গার প্রসঙ্গ সিলেবাসে রেখেছে একটি বিভাগ। বেশ কিছু ভারতীয় দেবদেবীকে এলজিবিটি হিসাবে দেখানো হয়েছে। জাতপাত নিয়েও আপত্তিকর কিছু টেক্সট রয়েছে।
বিজেপি ঘনিষ্ঠ ওই শিক্ষক নেতার দাবি, সবকটি কোর্সেই নানাবিধ বিকৃতি ঢুকিয়েছেন বামপন্থী শিক্ষকেরা। অন্যদিকে, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের আরেক সদস্য সৈকত ঘোষের অভিযোগ, কাউন্সিলের বৈঠকের ভিতরে এনডিটিএফ এবং বাইরে এবিভিপি একটানা স্লোগান দিয়ে অশান্তি তৈরি করেছিল। এই অবস্থায় ইংরেজি ও ইতিহাস বিভাগকে বলা হয়েছে প্রস্তাবিত সিলেবাসটি ফের খতিয়ে দেখতে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্বের প্রস্তাবিত সিলেবাস সামান্য কিছু রদবদল-সহ গৃহীত হয়েছে।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বামপন্থী শিক্ষকদের অভিযোগ, এবিভিপি বৈঠকের সময় কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা দরজা ভেঙে উপাচার্যের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। ইতিহাস ও ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান-সহ অধ্যাপক সৈকতকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ায় দাবি জানায়। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন জানিয়েছে, তাদের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ।
Read the full story in English