আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শাইক আয়েশাকে হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউওএইচ) ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী করা হবে। সেইমত তাঁকে প্রার্থীও করা হয়েছে। যা রীতিমতো গুঞ্জন তৈরি করেছে ছাত্র রাজনীতির মহলে। কারণ, এই প্রথমবার সভাপতির মত পদে এবিভিপি একজন মুসলিম প্রার্থী দিল। নির্বাচনে আয়েশার প্রতিদ্বন্দ্বী মহম্মদ আতিক আহমেদ। তিনি ভারতের স্টুডেন্টস ফেডারেশন, আম্বেদকর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ফোরাম (এসএফআই-এএসএ-টিএসএফ)-সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের জোটের দ্বারা মনোনীত। এবিভিপির এই পদক্ষেপ আয়েশাকে প্রচারের আলোয় তুলে ধরেছে। বিভিন্ন জ্বলন্ত সমস্যা - ছাত্রদের জন্য নানারকম সুবিধার ব্যবস্থা করা, ফেলোশিপ নিয়ে নানা অভিযোগের সুরাহার প্রতিশ্রুতি এবারের ছাত্র নির্বাচনে আয়েশার বক্তৃতায় উঠে এসেছে। এবিভিপি এই নির্বাচনে সেবালাল বিদ্যার্থী দলের (এসএলভিডি) সঙ্গে জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
আয়েশা, রসায়ন বিভাগের পিএইচডি। বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি ইউনিটের সহ-সভাপতি। প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলো অবশ্য সহজে এবিভিপিকে ছাড়ছে না। সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে লোকদেখানো প্রার্থী দেওয়া, সংখ্যালঘু তুষ্টিকরণের অভিযোগ করছে বিরোধীরা। এবিভিপির পালটা দাবি, আয়েশা বেশ কয়েক বছর ধরে এবিভিপি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। গত দুই বছর ধরে ক্যাম্পাসে সংগঠনের সবচেয়ে সোচ্চার কর্মীদেরও অন্যতম। তাই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। এবিভিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও গবেষক পড়ুয়া শ্রাবণ বি রাজ বলেন, 'শুধু এবিভিপির প্রার্থী হিসেবেই নয়। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তিনিই (আয়েশা) প্রথম মুসলিম মহিলা যিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শ্রাবণ বি রাজ জানিয়েছেন, সভাপতি পদে আয়েশার মনোনয়ন এবার হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির এক বড় চমক। আর বছর ২৪-এর আয়েশা কী বলছেন? তিনি বলছেন যে এবারের নির্বাচনে তাঁর ইস্যু নারীর ক্ষমতায়ন, ক্যাম্পাসের পরিকাঠামো উন্নত করা এবং ক্যাম্পাসে লেখাপড়ার পরিবেশ নিশ্চিত করা। এই প্রসঙ্গে আয়েশা বলেন, 'শিক্ষার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ এবং গোটা দেশকে এক করার জন্য চেষ্টাই আমাকে এবিভিপির প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। এবিভিপি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদের আরও সংগঠিত করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর, সেই কারণেই আমি এবিভিপির প্রতিনিধিত্ব করছি।'
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, কেন উঠছে অস্বচ্ছতার অভিযোগ?
আয়েশা বলেন, 'ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়, তার মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামোর অভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তায় আলো নেই। শিক্ষার্থীরা মেসে দাঁড়িয়ে খেতে বাধ্য হন। হোস্টেলের ঘর বসবাসের অযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জঙ্গল তৈরি হয়ে গেছে। যা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পড়ুয়াদের কাছে বিপজ্জনক করে তুলেছে। তার মধ্যে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর এবং দক্ষিণ ক্যাম্পাসের পরিকাঠামোর মধ্যে অসাম্য রয়েছে। লাইব্রেরি, জিম এবং খেলাধুলার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।' নির্বাচনে জয়ী হলে, তিনি এই সমস্ত সমস্যা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা চালাবেন বলেই আয়েশা প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।