তাঁর সিনেমার মুক্তি মানেই এক বিরাট ব্যাপার। তালিকার সর্বশেষ সংযোজন, 'জেলর'। এই ছবিও সেই বিরাট ব্যাপারের রাস্তা ছেড়ে বেরোয়নি। সিনেমা হলে ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসার ঢেউ তৈরি করলেও, রজনীকান্ত পরদার বাইরেও কম ঢেউ তোলেননি। সম্প্রতি যেমন সমস্ত চোখ চলে গিয়েছিল 'থালাইভা'র উত্তরপ্রদেশ সফরে। আরও স্পষ্ট করে বললে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং ইউপির বহু বছরের রাজনীতিবিদ রাজা ভাইয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের দিকে। অযোধ্যায় রাম মন্দির এবং লখনউয়ের আর্মি কমান্ড সেন্টারে প্রার্থনাও করতে দেখা গিয়েছে দক্ষিণের এই সুপারস্টারকে।
তার মধ্যে রজনীকান্তের সঙ্গে আদিত্যনাথের বৈঠক সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। যেখানে দক্ষিণের তারকাকে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের চরণ স্পর্শ করতে। তামিলনাড়ুর রাজনীতি ও সংস্কৃতির কারণে যাঁরা ঘোর আদিত্যনাথ বিরোধী, তাঁদের অনেকেই রজনীকান্তকে এতদিন ভগবান বলে ভাবেন। তাঁদের কাছে যোগীর চরণ রজনীকান্তের স্পর্শ একটা 'বিশ্বাসঘাতকতা'র মত ঠেকেছে।
লখনউয়ে রজনী-যোগী সাক্ষাতের ছবি সামনে আসার ঠিক আগে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন এবং কেরালের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন- দু'জনেই 'জেলার'কে দেখেছেন। তা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। তারই মধ্যে তামিল অভিনেতা তথা উদীয়মান রাজনীতিবিদ কমল হাসানের সিনেমার একটি পুরোনো ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে নাস্তিক চরিত্ররূপী কমল বলছেন, 'কখনও কারও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করবেন না, এমনকী ঈশ্বরেরও না'। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিভানকুট্টি রজনীকান্তকে আবার কটাক্ষ করে বলেছেন, 'স্ট্রেচিং এবং বাঁকানো সবসময়ই ভাল। কিন্তু, তিনি (রজনীকান্ত) যেভাবে বাঁকিয়েছেন, (তাঁর) পিঠ দুই ভাগে ভেঙে দিতে পারতেন।'
আরও পড়ুন- লক্ষ্য লোকসভা ভোট, বিজেপির ‘জাতীয়তাবাদ’-এর কোন দাওয়াই বাছল তৃণমূল?
রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ আবার উদ্বেগের সঙ্গে বলেছেন যে, রজনীকান্তের এই আচরণ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তামিলনাড়ুতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর ইমেজ বাড়াতে সাহায্য করবে। সমালোচনার মুখে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছেন রজনীকান্তের ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের দাবি, ব্যাপারটা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে, রাজনীতিকে ব্যক্তিগত বিষয়ের সঙ্গে আর সুপারস্টারের ইমেজের সঙ্গে নম্র আচরণকে না-মেশানোই উচিত।