বাংলায় পুলিশকে ব্যবহার করে শাসক দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আগাগোড়াই সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যা গত পরশু ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু হত্যায় অন্য মাত্রা পেয়েছে। এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় পর্যায়ে সরব হতে দেখা গেল কংগ্রেসকে। ঝালদায় দলীয় কাউন্সিলর খুনের নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে সোমবারই অভিযোগ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আর তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বাংলার আইশৃঙ্খলা অবনতি প্রসঙ্গ তুলে লোকসভায় বাংলায় সরব হলেন বহরমপুরের সাংসদ। তুললেন আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি। বক্তব্যের সময় অধীরকে টেবিল বাজিয়ে সমর্থন জানান কংগ্রেস সভানেত্রী অধীর চৌধুরী। সমর্থনে একই পথ বেছে নেন কংগ্রেসের অন্যান্য সাংসদরা।
লোকসভায় কী বলেছেন অধীর চৌধুরী?
সোমবার লোকসভার অধিবেশনে হাজি থাকতে পারেননি অধীর চৌধুরী। তার কারণ অধ্যক্ষকে ভাষণের শুরুতেই জানান তিনি। বাংলায় বলেন, 'গতকাল আমি ঝালদায় গিয়েছিলাম। সেখানে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। কংগ্রসের টিকিটে জেতা পুরসভার কাউন্সিলর তপন কান্দুকে ঝালদায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।'
কেন এই হত্যা তারও ব্যাখ্যা দিছেন অধীরবাবু। তাঁর কথায়, 'ঝালদায় পুরবোর্ড তৈরির কাজে কংগ্রেস এগিয়ে ছিল। কিন্তু শাসকদলের একটি অংশ পুলিশের সাহায্য নিয়ে তপন কান্দুকে হত্যা করল। বাংলায় নির্বাচন চলাকালীন এবং তার পরে খুন, রাহাজানি, হিংসা, দাঙ্গা, সন্ত্রাসের ঘটনা নির্বিচারে চলছে। লাগামহীন ভাবে চলছে। বাংলায় অরাজকতা চলছে।' ছাত্রনেতা আনিস খান মৃত্যুর কথা তুলেও পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলেন অধীর চৌধুরী।
অধীর চৌধুরীর ভাষণের সময়ই লোকসভায় তার প্রতিবাদ শুরু করে তৃণমূল সাংসদরা। প্রদেশ সভাপতিকে নিশানা করে বাংলায় আগাগোড়া জোড়া-ফুলের সাংসদরা বলতে থাকেন 'খুনি অধীর, গুণ্ডা অধীর।'
লোকসভায় অধীর চৌধুরীর বক্তব্যকে কংগ্রেসের 'দ্বিচারিতা' বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, 'কংগ্রেসের হঠাৎ সিবিআইয়ের প্রতি আস্থা ফুঠে উঠেছে। চিদাম্বরমের বাড়িতে সিবিআই-ইডি গেলে বিক্ষোভ, আর বাংলায় ঘটনা ঘটলেই সিবিআই তদন্তের দাবি- আসলে রাজনীতি করছে কংগ্রেস। তৃণমূলের বিরোধীতার জন্য বিজেপি কংগ্রেসকে একটা সুযোগ করে দিচ্ছে। বাংলায় কংগ্রেস-বিজেপি যে এক তা আবারও প্রকাশ পেল।'