পরবর্তী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে? আপাতত এই প্রশ্নেই নানা জল্পনা। তবে তাড়াহুড়োর বদলে নানা রাজনৈতিক সমীকরণ বিবেচনা করে সোমেন মিত্রের উত্তরসূরি বেছে নিতে চায় হাইকমান্ড। সব বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দৌড়ে উঠে আসছে অধীর চৌধুরী, আবদুল মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম। তবে, হাইকম্যান্ড এখনও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি।।
রাজ্য রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে কংগ্রেস। দলে নেতৃত্ব দেওয়ার মত অপেক্ষাকৃত তরুণ ব্রিগেড নেই। তাই হাল ধরতে কিছুটা বাধ্য হয়েই হাইকমান্ডের নজরে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন তিন সভাপতি। অধীর, মান্নান বা প্রদীপ- আপাতত এই তিন জনেই দলীয় সংগঠনে বা দলের হয়ে অন্য দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। অধীর চৌধুরী লোকসভায় কংগ্রেস নেতা, প্রদীপ ভট্টাচার্য রাজ্যসভার সাংসদ। অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। এই পরিস্থিতিতে জাতীয়স্তরের দায়িত্ব সামলে অধীর চৌধুরীর পক্ষে আদৌ প্রদেশ সভাপতির পদ সামলানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এক্ষেত্রে আবদুল মান্নান বা প্রদীপ ভট্টাচার্যই স্বাভাবিকভাবেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদের যোগ্য দাবিদার বলে মনে করছেন বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্ব।
রাজ্য পরের বছরই বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে তৃতীয় বিকল্প হিসাবে বাম ও কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই জোটের পুরধা ছিলেন প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। এই জোটের সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই আপাতত প্রদেশ সভাপতির মনোনয়ন হবে বলে সূত্রের খবর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলার এক শীর্ষ কংগ্রেস নেতার কথায়, 'মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্য- উভয়ই সিপিএমের তুলনায় তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন। দেখার হাইকমান্ড বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কতটা আগ্রহী। তাঁর উপর পুরো বিষয়টা নির্ভর করছে। নেতৃত্ব বামেদের সঙ্গে জোটে অনুমোদন দিলে এই দুই নেতার পক্ষে প্রদেশ সভাপতির দৌড়ে টিঁকে থাকা কিছুটা ধাক্কা খাবে।'
আবার অনেকের দাবি, অধীর-মান্নান ও প্রদীপ- এই তিন নেতাকেই বাংলায় দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হতে পারে। এক নেতার কথায়, 'আরও একটি বিকল্প রয়েছে। 'প্রথমত, অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ সভাপতি করে কাজের দায়িত্ব দুই কার্যকরী সভাপতিকে ভাগ করে দেওয়া। এদের একজন উত্তরবঙ্গে দেখবেন, অন্য়জন দক্ষিণবঙ্গ সামলাবেন। অদীর চৌধুরী মমতা বিরোধী বলেই পরিচিত। আগামী ভোটে কংগ্রেস-বাম জোটের ক্ষেত্রে তাঁর এই ভাবমূর্তি ও কাজ ফলদায়ক হতে পারে।'
এছাড়া, রাজ্যের একাংশের কংগ্রেস নেতাদের পক্ষ থেরে তরুণ প্রজন্মের কাউকে প্রদেশ সভাপতি করার প্রস্তাব হাইকমান্ডের কাছে দেওয়া হতে পারে। এক নেতার কথায়, 'দলের খোলনলচে পাল্টে দিতে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলে শীর্ষ নেতৃত্বকে অপেক্ষাকৃত তরুণ সম্ভাবনাময় ব্যক্তিকেই দলের দায়িত্ব তুলে দিতে বলব।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন