'কংগ্রেস সিবিআইকে দিয়ে আমাকে জেলে ভরেছে। মন্ত্রী থেকে বন্দী হয়েছি। তারপর কংগ্রেসের আইনজীবী আমার হয়ে মামলা লড়লেন'…. ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার এমন একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন যেপ্রসঙ্গে তিনি সাধারণত নীরব থাকেন। সোহরাবুদ্দিন শেখ এনকাউন্টার মামলার নাম না নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন অমিত শাহ।
অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেস সিবিআই-কে কাজে লাগিয়েতাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছে। এরপর তিনি সরাসরি মন্ত্রী থেকে বন্দী হন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে সমর্থন করতে এগিয়ে এলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক নিরুপম নানাবতী। শাহ বলেছিলেন যে 'হাইকোর্টের আইনজীবী নানাবতী, কংগ্রেসে থাকার পরও তিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং মামলা জিততে সাহায্য করেছিলেন'। দিব্যা কান্ত নানাবতীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক ভাষণে এ কথা বলেন অমিত শাহ। আসলে নিরুপম নানাবতী গুজরাটের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী এবং দিব্যকান্ত নানাবতীর ছেলে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নানাবতীর ছেলে এবং হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট নিরুপম নানাবতীর কথাও উল্লেখ করেছেন। সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) মামলায় জেলবন্দী থাকার সময় শাহের আইনজীবী হিসাবেও কাজ করেছিলেন তিনি। শাহ ২০১০ সালের ঘটনার কথা স্মরণ করেন, যখন তিনি সোহরাবুদ্দিন শেখের কথিত ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।
'কংগ্রেস আমাকে জেলে পুড়ল'
অনুষ্ঠানে শাহ বলেন, 'কংগ্রেস সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্য মামলা করেছে এবং আমাকে জেলে পাঠিয়েছে। স্পষ্টতই এটি আমার জন্য একটি কঠিন সময় ছিল। পাঁচ মিনিট আগে আমি মন্ত্রী ছিলাম আর পাঁচ মিনিট পরে আমি জেলের একজন বন্দি'। শাহ বলেন তাকে গ্রেফতারের পরে, কিছু আইনজীবী বন্ধু গুজরাটের তাবড় আইনজীবীদের নাম নিয়ে আলোচনা করছিলেন যারা এই মামলা থেকে শাহকে রেহাই দিতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় চলে আসে নিরুপম ভাইয়ের নাম। নিরুপমভাই কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কংগ্রেস নেতা ছিলেন এবং তার পটভূমিও কংগ্রেসের। তিনি (আমার) এই মামলা লড়বেন কিনা এই ভেবে চিন্তিত ছিলাম"। প্রবীণ আইনজীবীর প্রশংসা করে শাহ বলেন, 'নিরুপম আমার মামলা লড়তে রাজি হয়েছিলেন কারণ একজন কংগ্রেসি হওয়ার কারণে নিরুপম জানতেন আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে'।
আসলে, 'গ্যাংস্টার' সোহরাবুদ্দিন শেখের কথিত ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় ২০১০ সালের জুলাই মাসে সিবিআই শাহকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের মাত্র কয়েকদিন আগে শাহ মোদির নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে তুলসীরাম প্রজাপতির ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ আনা হয়। যিনি, সিবিআইয়ের মতে, সোহরাবুদ্দিনের এনকাউন্টারের সাক্ষী ছিলেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত এই মামলায় শাহকে বেকসুর খালাস বলে ঘোষণা করে। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই বলে রায় দেন আদালত।