Excise Policy Scam: আবগারিনীতি দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিরোধী শিবির একই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে আপ পরিচালিত পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধেও। এমনকী ৫০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল। তারপর গত বছরই পাঞ্জাবের আপ বিধায়ক কুলওয়ান্ত সিংয়ের মোহালির বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। জেরা করা হয় ভগবন্ত মান পরিচালিত পাঞ্জাব সরকারের তিন আধিকারিকে, চলে তাঁদের বাড়িতে তল্লাশিও। তাহলে কী দিল্লির পর ইডি-র নজরে পাঞ্জাব? কেজরিওয়ালের পরিণতির কথা ভেবেই আঁতকে উঠছে পাঞ্জাবের আপ নেতৃত্ব।
আবগারি নীতি দুর্নীতি মাথাচাড়া দিতেই ফের পুরনো অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কানে তুলেছেন বিজেপির পাঞ্জাবের প্রধান সুনীল জাখর। পাঞ্জাব সরকারের আবগারি নীতির তদন্ত করার কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গত বছর রাজ্যের আবগারি নীতি নিয়ে ইডি যে তিনজন পাঞ্জাব আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল তাঁরা হলেন, তৎকালীন অর্থ কমিশনার (আবগারি) কে এ পি সিনহা, আবগারি কমিশনার বরুণ রুজম ও রাজস্ব বিভাগের যুগ্ম কমিশনার নরেশ দুবে। এই তিনজন আধিকারিই ২০২২ সালে রাজ্যের আবগারি নীতি প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, রাজ্যে মদ বিক্রির জন্য পাইকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত দু'টি কোম্পানির কর্ণধারের-ই নাম রয়েছে দিল্লি আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায়।
ইডি আরও অভিযোগ করেছিল যে, পাঞ্জাব সরকারের আবগারি নীতি তৈরির সময় মান সরকারের দুই আধিকারিক রুজাম এবং দুবে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিশোদিয়ার বাড়িতে ছিলেন। শিশোদিয়া দিল্লির আবগারি মামলায় বর্তমানে হেফাজতে রয়েছেন। রুজাম ও দুবের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
আরও পড়ুন- Arvind Kejriwal: ‘একেবারেই অবাক নই’, জেলবন্দী কেজরির বার্তা পড়ে শোনালেন স্ত্রী সুনীতা
দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৮৮ সালের ১৭-এ ধারার অধীন বরুণ রুজম ও নরেশ দুবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য সিবিআই পাঞ্জাব সরকারের কাছে অনুমোদন চেয়েছিল। কিন্তু মান সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। আবগারি নীতি প্রযণের সময় অর্থ কমিশনার (আবগারি) পদে ছিলেন কে এ পি সিনহা, যিনি বর্তমানে অর্থ কমিশনার (উন্নয়ন) পদে কর্মরত।
আপের আশঙ্কা সরকারি আধিকারিকরা রাজনীতিবিদদের উপর জোর খাটানোর অভিযোগ তুলে ছাড় পেয়ে যেতে পারেন, কিন্তু বড় শস্তির মাশুল গুনতে হতে পারে, আপ নেতৃত্বকে।
সরকারি এক আধিকারিকের কথায়, 'সরকারের আবগারি নীতিনীতি সাফল্য পেয়েছে এবং সরকার কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে। কিন্তু কেন্দ্র কোন নজরে তা দেখছে তা জানা নেই। ইডি বিষয়টির অন্দরে প্রবেশ করচে, ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের মদের দোকানগুলির সঙ্গে যুক্ত একজন আপ বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে, এরপর হয়তো সচিবালয়ের করিডোরেও পৌঁছবে। কেউ জানে না এর পরে কী ঘটতে চলেছে।'
পাঞ্জাবের বিজেপি প্রধান সুনীল জাখর শুক্রবার বলেন, 'পাঞ্জাবের সরকার যাঁরা পরিচালনা করছেন তাঁরা কেজরিওয়ালের গ্রেফতার থেকে শিক্ষা নিতে পারেন এবং আমার অনুরোধ যে- ত্রুটিপূর্ণ নীতি ও নথিতে দায়িত্বশীল ও সৎ আধিকারিকরা যেন স্বাক্ষর না করেন।' জাখরের সংযোজন, 'পাঞ্জাব আবগারি নীতি নামে একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আপ পাঞ্জাবের মানুষকে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রতারণা করেছে।' তিনি আপ সাংসদ তথা দলের তরফে পাঞ্জাবের ইনচার্জ রাঘব চাড্ডা ও মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে নিশানা করে বলেন, 'এইসব নেতারাই রাজ্যের উন্মুক্ত লুট ও লুটপাটের অনুমতি দিয়েছেন।'
আকালি দলের সাংসদ হরসিমরত কৌর বাদলও আপকে আক্রমণ করে বলেছেন, 'দিল্লি কেলেঙ্কারিতে স্বঘোষিত ইমান্দার অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করার পরে, একই কেলেঙ্কারি করে যাঁরা পাঞ্জাবের কোষাগার লুট করেছিল তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করার সময় এসেছে। পাঞ্জাবের আবাগারি নীতি, দিল্লি আবাগারি নীতির উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছিল।'