'অনাস্থা ভোট যুক্তিহীন', রাজ্যপালকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা, তবে মহারাষ্ট্রের কুর্সিতে ফেরানো যাবে না উদ্ধবকে

রায়ের পর বড় ধরনের স্বস্তি পেল শিন্ডে শিবির।

রায়ের পর বড় ধরনের স্বস্তি পেল শিন্ডে শিবির।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Eknath Shinde, Maharashtra, shiv sena, supreme court, Uddhav Thackeray"

পদত্যাগ না করলে আবার মুখ্যমন্ত্রী হতেন উদ্ধব ঠাকরে! দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ (১১ মে) মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকট মামলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে এসেছে। রায়ের পর বড় ধরনের স্বস্তি পেল শিন্ডে শিবির। আদালত স্পষ্ট ভাষায় বলেছে যে বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে না। এ জন্য স্পিকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে জোট সরকারের পতন প্রসঙ্গে  রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির ভূমিকাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট।  

Advertisment

আদালত বলেছে যে উদ্ধব ঠাকরে 'ফ্লোর টেস্টের' মুখোমুখি হননি, তাই তাকে পুনর্বহাল করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য 'ফ্লোর টেস্ট' ডেকেছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারি, সেটা অবৈধ বলেও এদিন জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেক্ষেত্রে বড় ভুল করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় বসার আগেই যেহেতু ইস্তফা দিয়েছিলেন উদ্ধব, তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে পুনর্বহাল করা যাবে না বলেই মত শীর্ষ আদালতের।

সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও বলেছে যে উদ্ধব ঠাকরে পদত্যাগ না করলে মহারাষ্ট্রে তাঁর সরকার পুনরুদ্ধার করা যেত। বেঞ্চের এই মন্তব্যের পরে, এটা স্পষ্ট যে উদ্ধব ঠাকরে যদি পদত্যাগের জন্য তাড়াহুড়া না করতেন তবে তিনি আবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট আজ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন।

Advertisment

গতবছর জুনের পদক্ষেপ দলত্যাগ বিরোধী কার্যকলাপের মধ্যে পড়ে কি না সেই বিষয়ে উদ্ধব ঠাকরের করা মামলায় আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ঠাকরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার জন্য শিন্ডে এবং ১৫ বিধায়ককে অযোগ্য বলে ঘোষণা করতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি তাঁদের রায়ে এদিন বলেছেন, রাজ্যপাল যেভাবে অনাস্থা ভোট ডেকে দিয়েছিলেন, তার কোনও যুক্তিই ছিল না। ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে শাসক দলের হাতেগোনা কিছু বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করা, অনাস্থা ভোট ডাকার জন্য সেটা যথেষ্ট কারণ ছিল না।

গত বছর, শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং বিজেপির সমর্থনে সরকার গঠন করেছিলেন। রাজ্যপাল শিন্ডে সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছলে তা সাংবিধানিক বেঞ্চে স্থানান্তর করা হয়। বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি পিএস নরসিমা। 

ঠাকরে শিবিরের পক্ষে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করেন সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংভি এবং দেবদত্ত কামাত সহ আইনজীবী অমিত আনন্দ তিওয়ারি। অন্যদিকে, একনাথ শিন্ডে পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট নীরজ কিষাণ কৌল, হরিশ সালভে, মহেশ জেঠমালানি এবং আইনজীবী অভিকল্প প্রতাপ সিং এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। যেখানে রাজ্যের গভর্নরের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে হাজির হন।

সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে দায়ের করা মামলার রায় দিয়েছে, এবং আদালত স্পষ্ট করেছে যে মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের সরকার তার পদেই আসীন থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের কাছে বড় ধাক্কা।  তবে একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত বলেছে যে রাজ্যপালের 'ফ্লোর টেস্টের' সিদ্ধান্ত ভুল ছিল এবং উদ্ধব ঠাকরে যদি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ না করতেন তবে তাকে ফের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা থাকত। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছে যে উদ্ধব সরকারকে পুনর্বহাল করা যাবে না, কারণ তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন এবং 'ফ্লোর টেস্টের' মুখোমুখি হননি, তাই তার পদত্যাগ বাতিল করা যাবে না।

Eknath Shinde