২৪ ঘন্টাও হয়নি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়েছেন বিজয় রুপানি। এরপরই তড়িঘড়ি তাঁর উত্তরসূরি খুঁজতে মরিয়া গেরুয়া বাহিনী। কেন্দ্রীয় শাসক দলের 'মডেল' রাজ্যের মসিহার সন্ধানে ইতিমধ্যেই দুই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে বিজেপি। আজই হয়তো ঘোষণা করা হবে নয়া মুখ্যমন্ত্রীর নাম। তবে, তার আগে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে উঠে আসছে বেশ কয়েটি নাম। এঁদের কেউ দলীয় সংগঠনে আবার কেউ কেন্দ্রীয় বা রাজ্যে মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
একনজরে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা ব্যক্তিদের পরিচয়-
নীতীন প্যাটেল (৬৫)
রুপানি মন্ত্রিসভায় উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্বে নীতীন প্যাটেল। কাদভা পাতিদান বংশভূত এই বিজেপি নেতার শিকড় জড়িয়ে রয়েছে মেহসানা জেলায়। ১৯৯৫ সাল থেকেই গুজরাট মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেটে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি। বিগত দিনে বিজেপির 'মডেল' রাজ্য গুজরাটের অর্থ, স্বাস্থ্যের মত দফতরের মন্ত্রীত্ব সামলেছেন ছিলেন নীতীন প্যাটেল। ২০১৬ সালে আনন্দীবেন প্যাটেল মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়লে নীতী প্যাটেলেরই তাঁর জায়গায় বসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তেব সমীকরণ বদলে যায়। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে বসেন বিজয় রুপানি।
মনসুখ মান্ডব্য (৫৯)
কৃষক পরিবারের সন্তান মনসুখ মান্ডব্য ভাবনগরের হানোল গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে এবিভিপি-র সদস্য তিনি। এরপর থেকে তাঁর উত্থান নজরকাড়া। ২০০২ সালে প্রথম বিধানসভা ভোটে লড়াই করেন এই লিউভা পাতিদার সম্প্রদায়ভুক্ত যুব নেতা। ২০১২ সালে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৬-তে মোদী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। আর পাঁচ বছর পর দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসানো হয়েছে মান্ডব্যকে।
গোর্ধান জাদাফিয়া (৬৭)
লিউভা পাতিদান সম্প্রদায়ের এই বিজেপি আগেও রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন গোর্ধান জাদাফিয়া। এই নেতাও ভাবনগরের বাসিন্দা। গুজরাটের প্রথম বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর কেশুভাই প্যাটেলের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই নেতা। এমনকী মোদীর বিরোধিতা করে গঠন করেন মহা গুজরাট জনতা পার্টি, পরে যা কেশুভাই গঠিত গুজরাট পরিবর্তন পার্টির সঙ্গে মিশে যায়। পরে অবশ্য বিজেপিতেই ফিরে আসেন তিনি। বর্তমানে গোর্ধান জাদাফিয়া রাজ্য বিজেপির সব-সভাপতি।
প্রফুল্ল খোদাভাই প্যাটেল (৬৩)
দমন-দিউ, দাদরা নগর হাভেলি ও লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক ছিলেন প্রফুল্ল খোদাভাই প্যাটেল। মুখ্যমন্ত্রী মোদী মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এই নেতা। ২০০৭ সালে হিম্মতনগর থেকে ভোটে জেতেন প্রফুল্ল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অত্য ঘনিষ্ঠ এই বিজেপি নেতা।
সি আর পাতিল (৬৬)
বর্তমানে গুজরাট বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সি আর পাতিল। চলতি বছর জুলাইতেই এই গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রাক্তন এই পুলিশ কর্তা। আদি নিবাস মহারাষ্ট্রের জদ লগাঁও-তে হলেও বর্তমানে থাকেন গুজরাটেই। দায়িত্ব পেয়েই গুজরাটে গেরুয়া দলের সাংগঠনিকস্তরের বেশ কয়েকটি বড় বদল এনেছেন পাতিল। পরের বছর ডডিসেম্বরে গুজরাটে ভোট। সি আর পাতিলের নেতৃত্বেই 'মডেল' রাজ্যে জয় ছিনিয়ে আনতে মরিয়া পদ্ম ব্রিগেড।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা, গুজরাটের কৃষি মন্ত্রী আরসি ফালদু-র নামও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার দৌড়ে রয়েছে। পাতিদানরা আগে থেকেই তাঁদের সম্প্রদায় থেকে কোনও নেতাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর করার দাবি জানিয়েছিলেন। ফলে মুক্যমন্ত্রী বাছতে বহু সমীকরণকে মাথায় রাখতে হচ্ছে মোদী, শাহ, নাড্ডাদের।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন