একটা বিধানসভা ভোট সব হিসেব উল্টে দিয়েছে। ভোটের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। সেই ছবিটাই এখন সম্পূর্ণ উল্টেছে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে জোড়াফুলের প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়ছে। মোদী-বিরোধী প্রধান মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাইছে দেশের বিরোধী দলগুলির একাংশ। এই আবহে রাজ্যে তৃণমূলের শক্তিও বেড়ে চলেছে।
বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দল ছাড়ছেন একের পর এক বিধায়ক-নেতা-কর্মী। সোমবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। সোমবারের পর মঙ্গলবার ফের ভাঙন বিজেপিতে। দল ছাড়লেন বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। মঙ্গলবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদারদের উপস্থিতিতে তৃণমূলে ফেরেন বিশ্বজিৎ দাস। বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। পরে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। ‘ভুল বোঝাবুঝিতে তৃণমূল ছেড়েছিলাম। যেটা না হওয়াই উচিত ছিল। বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ভুলে তাই ফের তৃণমূলে ফিরে এলাম।’ এদিন শাসকশিবিরে ফিরে এমনই বলেন বিশ্বজিৎ। কেন ছাড়লেন বিজেপি? প্রশ্নের উত্তরে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশ্বজিৎ দাস। বিজেপিকে দুষে তাঁর মন্তব্য, ‘ওখানে কাজের পরিবেশ নেই। নিজেদের মধ্যেই গন্ডগোল করছে।’
Advertisment
এদিকে একের পর এক বিধায়কের দলত্যাগে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। ফের এক দলীয় বিধায়কের তৃণমূলে ফেরা প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন ,"দলবদলু বিধায়কদের বিরুদ্ধে বিজেপি ব্যবস্থা নেবে। অনেকে ভয়ে, অনেকে প্রশাসনের চাপে, অনেকে আবার মমতা ভক্তিতে বিজেপি ছাড়ছেন।"
শুরুটা করেছিলেন মুকুল রায়। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়েও ছেলেকে নিয়ে ফের তৃণমূলেই ফিরেছেন মুকুল। রাজ্য রাজনীতির চাণক্যের দলবদলেই ইঙ্গিতটা ছিল স্পষ্ট। মুকুল রায়ের হাত ধরেই বঙ্গ বিজেপির ঘর ভাঙতে উদ্যোগী হয় তৃণণূল। জেলাস্তরেও গত কয়েকমাসে বেশ কিছু বিজেপি নেতা-কর্মী ফিরেছেন তৃণমূলে। একটা সময় তৃণমূল ছেড়ে বিজদেপিতে যাওয়া একাংশের নেতারা এখনও জোড়াফুলে না ফিরলেও পদ্ম শিবিরে নিষ্ক্রিয় ভূমিকাতেই থেকে গিয়েছেন। একে একে তাঁরাও তৃণমূলে ফিরবেন বলে জল্পনা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন