/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/12/The-backside-of-the-KT-Plaza-building.jpg)
কেটি প্লাজা এলাকার পিছনের অংশ
সিনে দুনিয়ার 'বাবু ভাইয়া' তথা অভিনেতা পরেশ রাওয়াল বাঙালি আর তার মাছ খাওয়া নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, সেই মন্তব্য আহমেদাবাদের মানেকচকের সরু বাইলেনগুলোয় আলোড়ন তুলেছে। এই অঞ্চলের খাবারের বাজার, গয়না শিল্প থেকে নানা ক্ষেত্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঙালি শ্রমিকরা কাজ করেন। বছর ৩২-এর এমনই এক বাঙালি শ্রমিক জানিয়েছেন, মিছিলের নামে কার্যত প্রহসন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শেষ নির্বাচনী প্রচারে মাত্র ৭০০ মিটার গিয়েছেন মিছিলের নামে। তাকেই মোদীর মিছিল বলে চালানো হয়েছে। ওই বাঙালি শ্রমিক গুজরাটি ও বাংলা মিশিয়ে বললেন, 'দেখুন আমরা মুসলিম বাঙালিরা আমিষ খাওয়ার জন্য কোনও সমস্যায় পড়ি না। কারণ, অশান্ত এলাকা আইন অনুযায়ীই আমরা মুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গেই থাকতে বাধ্য হই।'
তাহলে গুজরাটের বাঙালি হিন্দুরা কি সমস্যায় আছেন? এক জুয়েলারি দোকানের মালিক নিজের পরিচয় দিতে চাইলেন না। শুধু বললেন, 'বাবার এক বন্ধু আমাদের বাড়িতে আসতেন মাছ ও মাংস রান্না করার জন্য। তারপর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খেতেন।' তাহলে পরেশ রাওয়ালের মন্তব্য? স্রেফ মানেক চকের নির্বাচনী প্রচার বলেন মনে করছেন গুজরাটবাসী বাঙালিরা। তাঁদের অভিযোগ, অন্যান্য সমস্যা ঢাকতেই রাওয়াল বাঙালির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন- অভিষেকের নির্দেশে চটজলদি কাজ, পদত্যাগ মারিশদা পঞ্চায়েতের তিন মাথার
মঙ্গলবার ভালসাদে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় আহমেদাবাদ পূর্বের প্রাক্তন সাংসদ পরেশ রাওয়াল বলেন, 'চাকরি এবং গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আসল সমস্যা না। কী হবে যদি রোহিঙ্গা পরিযায়ী আর বাংলাদেশিরা আপনার আশেপাশে বসবাস করতে শুরু করে? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবেন?' রাওয়ালের এই মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক হইচই শুরু হয়। কলকাতায় প্রাক্তন সাংসদ-অভিনেতার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। যার পরে রাওয়াল জানিয়েছেন, তিনি স্রেফ বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের কথা ভেবে এই মন্তব্য করেছেন। নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন বিজেপির সাংসদ-অভিনেতা।
গুজরাটের অনেক বাঙালি কিন্তু, মনে করছেন রাওয়াল আসলে একটা সমস্যার কথা ফাঁস করে দিয়েছেন। গুজরাটে বসবাসকারী বাঙালিরা যা দীর্ঘদিন ধরেই ভোগ করে আসছে। যে এলাকা বাঙালি অধ্যুষিত বা যে এলাকার জন্য রাওয়াল এই মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ, সেই মানেক চকের পরিস্থিতি কিন্তু বেশ খারাপ। সেখানকার বহু বাসিন্দাকেই হামেশা শুনতে হয় যে 'বাঙালি মানে কাঙালি', 'বাঙালি মানেই বাংলাদেশি', 'বাঙালি মানেই রোহিঙ্গা'। শুধু তাই নয়, এই এলাকার বাসিন্দাদের দিনের পর দিন অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাতে হয়। তাঁদের কাজের শর্তও অত্যন্ত খারাপ থাকে। পাশাপাশি, চলে ঘনঘন পুলিশ হয়রানি। তার ওপর বিভিন্নরকম দুষ্টচক্রের লোকজনের আনাগোনা তো লেগেই থাকে।
Read full story in English