Advertisment

বুথ সভাপতির জবাবে নিজের গড়েই বেসামাল অনুব্রত

তিনি বলেন, "আপনার মুখে যদি এই কথা হয় আপনি তো ভোটই করাতে পারবেন না।" তাতেও দমছেন না। বুথ সভাপতির এবার জবাব, "আমি তো ৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করে আসছি।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ছবি ফেসবুক থেকে।

মন্ত্রী বা সাংসদ নয়, মায় বিধায়কও নয়। তবু জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে রাজ্যে এমন দোর্দন্ডপ্রতাপ, ক্ষমতাবান নেতা আর কে আছে! রাজ্য-রাজনীতিতে একথা মানেন অনেকেই। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে সমানতালে মুখে মুখে তর্ক করে গেলেন এক বুথ সভাপতি। শুধু তর্ক নয় রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছোড়ার ঢঙে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিলেন ওই বুথ সভাপতি।

Advertisment

করোনা আবহেও টানা কর্মীসভা করে চলেছেন বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। এদিন সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের দমদমা অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মীসভায় অনুব্রত মন্ডলকে সমানে মুখের ওপর জবাব দিয়ে গেলেন মাজিগ্রামের বুথ সভাপতি। কেন লোকসভা ভোটে গ্রামের দুটো বুথে তৃণমূল হেরে গিয়েছে প্রশ্ন করতেই বুথ সভাপতি গণেশ রায় অনুব্রতর মুখের ওপর বলে দেন, "কেন হারব না। গ্রামের রাস্তা খারাপ।" তারওপর গ্রামীণ প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই শুরু, এরপর টানা চলতে থাকে জেলা সভাপতির সঙ্গে বুথ সভাপতির টানটান সওয়াল-জবাব।

অনুব্রত মন্ডল তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর গ্রামের হিন্দু মানুষের বিশ্বাস আছে? প্রশ্নের জবাব তীর্যক ভাবেই দিতে শুরু করেন গণেশবাবু। মমতার প্রতি ভরসা আছে বললেও তিনি গ্রামের খারাপ রাস্তার জন্য মানুষের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "আমি আজ রাস্তা দিয়ে আসছিলাম, তখন গ্রামের এক ছোট্ট ভাই বলছে রাস্তায় কী মাছ চাষ করবেন? আমি তাঁকে কোনও উত্তর দিতে পারি নাই।" একথা শুনে সেই বামফ্রণ্ট আমলের কথা টেনে আনেন অনুব্রত। তিনি স্থানীয় তৃণমূল নেতার উদ্দেশে বলেন, "৩৪ বছরে আগে কেন করেনি। আমরা সবে ৯ বছর এসেছি। ৩৪ বছর তখন কী করে কষ্ট করে যেতেন।" পাল্টা জবাব শানান বুথ সভাপতি। তাঁর উত্তর, "তখন মোটামুটি সাইকেলটা যেত। এখন রাস্তার যা অবস্থা। দুপাশে জল দাঁড়িয়ে আছে। সাইকেল নিয়ে যাওয়া যায় না।" ফের অনুব্রতর হুঙ্কার, "৩৪ বছর আগে ভাল ছিল? বামফ্রণ্ট আমলে ভাল ছিল? হাল ছাড়ার পাত্র নন বুথ সভাপতি। আরও কড়া জবাব, "এর থেকে ভাল ছিল।" শেষমেশ রণে ভঙ্গ দেওয়ার ঢঙে অনুব্রত বলেন, "আমরাই খারাপ করে দিলাম তো!" তবু নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেনি ওই স্থানীয় তৃণমূল নেতা। বলেন, "রাস্তাটা এখনও খারাপ।"

এভাবেই টানা তর্ক-বিতর্ক চলতে থাকে বীরভূমের তাবড় জেলা সভাপতি ও বুথ সভাপতির মধ্যে। শেষ পর্বে জেলা সভাপতি যখন জানতে চান, "কী চাই?" এবার বুথ সভাপতির স্পষ্ট জবাব, "আমরা চাই রাস্তাঘাট, পানীয় জলের ব্যবস্থা, রাস্তায় রাস্তায় যে বৈদ্যুতিক পোল রয়েছে তাতে আলোর ব্যবস্থা।" এবার আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, "আপনার মুখে যদি এই কথা হয় আপনি তো ভোটই করাতে পারবেন না।" তাতেও দমছেন না। বুথ সভাপতির এবার জবাব, "আমি তো ৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করে আসছি।"

এরপরই অনুব্রত বলে ওঠেন, বুথ কমিটি থেকে সরিয়ে দাও। এই ধরনের লোক থাকার থেকে না থাকাই ভাল। এই ঘটনায় তোলপাড় হয় জেলা থেকে রাজ্য তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। তবে শেষমেষ ওই বুথ সভাপতিকে সরানো হয়নি বলে জানিয়েছেন অনুব্রত মন্ডল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee anubrata mondal All India Trinamool Congress
Advertisment