Advertisment

দুই লোকসভা আসনে হার, রাজনৈতিক হিংসা, জ্যোতিপ্রিয়র ডানা ছাঁটল দল

দমদম লোকসভার সাংগঠনিক দায়িত্বে মন্ত্রী তাপস রায়, ব্যারাকপুরে বিধায়ক নির্মল ঘোষ, বারাসাতে বিধায়ক রথীন ঘোষ, বসিরহাটে মন্ত্রী সুজিত বোস এবং বনগাঁয় গোবিন্দ দাসের ওপর দায়িত্ব বর্তেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata banerjee, tmc,

মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক। এক্সপ্রেস ফাইল ফোটো

উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচ লোকসভার আসনের মধ্যে দুটি আসন বিজেপির কাছে খুইয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার ওপর জেলায় একের পর এক তৃণমূল বিধায়ক যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। যোগ দিচ্ছেন কাউন্সিলররা। হাতছাড়া হয়েছে ভাটপাড়া পুরসভা। তৃণমূল দখল হারাতে পারে বনগাঁ পুরসভারও। এই পরিস্থিতিতে জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ডানা ছাঁটলেন দলীয় নেতৃত্ব। তাঁকে সভাপতি পদে বহাল রাখলেও তাঁর দায়িত্বভার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

Advertisment

তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলার পাঁচটি লোকসভা আসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাঁচজনকে। দমদম লোকসভার সাংগঠনিক দায়িত্বে মন্ত্রী তাপস রায়, ব্যারাকপুরে বিধায়ক নির্মল ঘোষ, বারাসাতে বিধায়ক রথীন ঘোষ, বসিরহাটে মন্ত্রী সুজিত বোস এবং বনগাঁয় গোবিন্দ দাসের ওপর দায়িত্ব বর্তেছে। এই পাঁচজনের দায়িত্বে থাকছে ৭টি করে বিধানসভা। তাঁরা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে কো-অর্ডিনেশন করবেন। জানা গিয়েছে, একইসঙ্গে এই পাঁচ বিধায়ক তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ নিয়েই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসন বিজেপি দখল করেছে। এর মধ্যে ব্যারাকপুর লোকসভা আসনটি ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে 'প্রেস্টিজ ফাইট'। এই আসনের ফল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তৃণমূল যুবর সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, ২ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয় পাবে তৃণমূল। ২ লক্ষের একটাও কম পাবে না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, তৃণমূল ছেড়ে আসা অর্জুন সিংয়ের কাছে পরাজিত হলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও এই আসনটি ছিল সম্মান রক্ষার লড়াইয়ের প্রতীক। স্বভাবতই দলে নম্বর কমে যায় রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর।

শুধু তাই নয়, ভাটপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনেও অর্জুন পুত্রের কাছে গোহারা হেরেছেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। এরই পাশাপাশি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বনগাঁ লোকসভা আসনে বিজেপির শান্তনু ঠাকুর জয় পেয়েছেন। বিজেপিতে চলে গিয়েছে মতুয়া ভোটও। সবথেকে বড় বিষয়, যে জেলায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন, তা হলো এই উত্তর ২৪ পরগনা। নেতৃত্ব মনে করেছেন, দলের ভাঙন ঠেকাতে ব্যর্থ জ্যোতিপ্রিয়। নিজের এলাকায়ও ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। এসবই তাঁর বিপক্ষে গিয়েছে বলে মনে করছে দলের একাংশ।

এসবের মধ্যেই আবার একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটছে এই জেলাতেই। সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বিজেপির দুই ও তৃণমূলের একজন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বিজেপির দাবি, এক্ষেত্রে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। যদিও পুলিশ গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। ভোটের দিন থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ভাটপাড়া বিধানসভা এলাকা। নৈহাটি ও কাঁচরাপাড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করার পরও শান্ত হয় নি উত্তর ২৪ পরগনা। রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন। তাঁর একার দ্বারা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পৃথক ভাবে ওই পাঁচজনকে পাঁচ লোকসভার দায়িত্ব বন্টন করা হল। এবার থেকে আর একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না জ্যোতিপ্রিয়।

tmc Mamata Banerjee All India Trinamool Congress
Advertisment