আগামী বছর ২১শে ঐতিহাসিক সভা হবে। ভার্চুয়াল সবার শুরুতেই জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মহামারীর কারণে ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালন করা যায়নি। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এদিন মমতা বলেন, 'চক্রান্তকে দূরে ঠেলে আগামী বছর ঐতিহাসিক ফলাফলের পর ঐতিহাসিক ২১ জুলাইয়ের সভা হবে। তার প্রস্তুতি আজ থেকেই শুরু করলাম।' একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন যে, 'কেউ চিন্তা করবেন না। সবাই ত্রাণের টাকা পাবেন। বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম কুৎসা রটাচ্ছে। ১০ কোটি মানুষকে রেশন দেওয়া হচ্ছে। কোথায় এমন রাজ্য পাবেন যেখানে এরকম হয়। তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে সারা জীবন বিনা মূল্যে রেশন পাবেন। আজ ঘোষণা করে গেলাম।'
এদিন সভায় তৃণমূলনেত্রী নিশানা করে বিজেপিকে। তাঁর দাবি, '২০১৯-এ কয়েকটা আসন পেয়ে বিজেপি লম্ফঝম্প শুরু করেছে। এই অহংকারই ভাঙতে হবে। ভায় পাবেন না। রুখে দাঁড়ান। টাকার প্রলোভন আসবে। কিন্তু ওটা নেবেন না। সম্মানই বড় কথা। বিজেপিকে ভোট দিলে কি হয় তা ভাটপাড়, নৈহাটিতে গিয়ে দেখুন। ভালোভাবে থাকতে পারবেন না। জীবন-জীবীকা দু'টোই যাবে।' তাঁর দাবি, 'বিজেপির মতো তুচ্ছ দলকে হারাতে পারবেন না। ওরা টাকা দিয়ে ভোট লুঠ করে। এই বিষয় বেশিদিন চলতে পারে না। বাংলাকে এভাবে দখল করা যাবে না।' করোনা সংক্রমণ বাংলায় বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, 'ভয় পাবেন না, সংক্রমণ বাড়ছে, এখন একটু বাড়বে। কিন্তু আস্তে আস্তে করোনার প্রভাব কমে যাবে। আমরা নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়েছি। ১৫ অগাস্টের মধ্যে দিনে ২৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা হবে।'
তবে, বিধানসভা ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, ততই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে বিজেপি। এবার তৃণমূলের 'শহিদ দিবস'-এর পালটা হিসেবে 'প্রহসন দিবস'-এর ঘোষণা করেছে বঙ্গ বিজেপি। মঙ্গলবার গোটা রাজ্যজুড়ে জায়গায়-জায়গায় কালো পতাকা, কালো ব্যাজ পরে বিক্ষোভে দেখান বিজেপি কর্মীরা। মূলত করোনা নিয়ে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, রেশন নিয়ে দুর্নীতি, আমফান ত্রাণ দুর্নীতি, হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যু, চোপড়ায় কিশোরীর মৃত্যুর প্রতিবাদেই পথে নামে গেরুয়া শিবির।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
Live Blog
All india trinamool congress 21-july sahid divas virtual rally Mamata Banerjee. ২১শে জুলাই সংক্রান্ত সব খবর জানতে চোখ রাখুন এখানে...
মঞ্চ বেঁধে সভা নয়, এবার ২১শে ভার্চুয়াল সভায় দুপুর ২টোয় বক্তব্য রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তার আগে এদিন সকালে একাধিক টুইট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি লিখেছেন, 'ফের জনগণের আশীর্বাদ মেলার পর একুশ সালে সবচেয়ে বড় আকারে ২১শে জুলাই পালন করা হবে। '
We have organised a unique booth level outreach programme across the State today from 1 PM. At 2 PM, I will be addressing my brothers and sisters in every booth. In July 2021 we will have the biggest ever programme after the people bless us again (3/3) pic.twitter.com/jfdgLblUq8
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 21, 2020
মহামারীতে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। এবার ২১ জুলাই শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় আর আছড়ে পড়বে না শাসক দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের ঢল। স্তব্ধ হবে না মহানগর। অন্যান্যবার ২১ জুলাইয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকেই মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়ে যায়। আনাগোনা করেন তৃণমূলের হেভিওয়েটরা। দলনেত্রীর বাণী শুনতে দু-তিন দিন আগে থেকেই গোটা বাংলা থেকে কলকাতায় আসতে থাকেন মানুষ। জনসমাগমেই মানুষের মনের কথা পড়ে ফেলতে পারেন নেতৃত্ব। কিন্তু এবার আর সেই অবকাশ নেই। ভার্চুয়াল ব়্যালি হবে। বক্তব্য রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এতে মানুষের মনে কতটা প্রভাব পড়বে? ২১শের বিধানসভা ভোটের মাত্র কয়েকমাস আগে এখন সেটাই ভাবাচ্ছে জোড়া-ফুল নেতৃত্বের একাংশকে। পড়ুন বিস্তারিত
ধর্মতলার মোড়। পিছনে সিইএসসি-র চেনা সদর দফতর। একপাশে বাংলার বাঘের প্রস্তর মূর্তি। পাশের বিশাল মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে সদা চঞ্চল নেত্রী। আর সামনে যতদূর চোখ যায় অগনিত গিজগিজে কালো মাথা। সি আর এ্যাভিনিউ থেকে টি বোর্ড, গণেশচন্দ্র এ্যাভিনিউতে বড় বড় এলইডি স্ক্রিন। অনুগামীরা শুনে নিচ্ছেন নেত্রীর বার্তা- বিগত এক দশক ধরে খুব চেনা তৃণমূলের ২১শের শহিদ দিবসের এই সভা এবার হচ্ছে না। সৌজন্যে কোভিড-১৯। তবে, শহিদ দিবস উপলক্ষে ২১শের সকালে ধর্মতলায় দলীয় পতাকা লাগাতে ব্যস্ত কতিপয় তৃণমূল কর্মী।
ছবি: শশী ঘোষ
একুশের মঞ্চই সাক্ষী থেকেছে তৃণমূলে ১৯৯৩ সালের পর থেকে প্রতিবছর এই দিন শহিদ দিসব হিসেবেই পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রতিবছর ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দলের আগামী দিনের লক্ষ্যপূরণের বার্তা দিয়ে থাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার রাজনীতিতে এই দিনটিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবই দেখে রাজনৈতিক মহল। বাম জমানায় বিরোধী মুখ হিসেবে মমতার উত্থানের পিছনেও ২১ জুলাই অন্যতম। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? পড়ুন বিস্তারিত
এ বারের ২১ জুলাই বড় তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, হল করোনার জন্য সভা করতে না পারা। ফলে, ভোটের আগে সশরীরে সভায় উপস্থিত না হতে পারা দলীয় কর্মী, সমর্থকদের কাছে নেত্রীর বক্তব্য কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
'বিজেপিতে যারা ভুল করে চলে গিয়েছেন তারা তৃণমূলে ফিরে আসুন। সিপিএমে যারা রয়েছেন তারাও আসুন। কংগ্রেসে থেকে বিজেপি ভোট দেওয়ার থেকে তৃণমূলে আসুন। এই দলে শোষণ করার কেউ নেই। শাসনের লোক আছে। একমাত্র তৃণমূলই পারে সোনার বাংলা গড়তে।'
'বিজেপিকে ভোট দিলে কি হয় তা ভাটপাড়, নৈহাটিতে গিয়ে দেখুন। ভালোভাবে থাকতে পারবেন না। অশান্তি লাগিয়ে রেখে দেবে।'
২১শে জুলাই দিচ্ছে ডাক, একুশে বাংলা থেকে বিজেপি নিপাত যাক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
'২০১৯-এ কয়েকটা আসন পেয়ে বিজেপি লম্ফঝম্প শুরু করেছে। এই অহংকারই ভাঙতে হবে। ভায় পাবেন না। রুখে দাঁড়ান। প্রলোভন আসবে। কিন্তু ওটা নেবেন না। সম্মানই বড় কথা।' দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দলনেত্রীর।
'সিপিএম আমলে মার খেয়ে খেয়ে আমি এই জায়গায় এসেছি। বিজেপি বাংলার মানুষকে দিনেরর পর দিন অপমান করছে, লাঞ্ছনা করছে। আমি এটা বরদাস্ত করব না। ৩৪ বছরের সিপিএমকে আপনারা যদি সরাতে পারেন, তবে বিজেপির তো তুচ্ছ দলকে পারবেন না। ওরা টাকা দিয়ে ভোট লুঠ করে। এই বিষয় বেশিদিন চলতে পারে না।'
'ভয় পাবেন না, সংক্রমণ বাড়ছে, এখন একটু বাড়বে। কিন্তু আস্তে আস্তে করোনার প্রভাব কমে যাবে। আমরা নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়েছি। ১৫ অগাস্টের মধ্যে দিনে ২৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা হবে।'
ভার্চুয়ালে দলনেত্রীর ভাষণ, জায়েন্ট স্ত্রিনে চোখ শহরবাসীর
ছবি: শশী ঘোষ
'উদ্বাস্তু থেকে রাজবংশী, সবাই আমার শরীরের অংশ। কিন্তু এখন জাতিগত বিরোধ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হিন্দু-মুসলমানে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করে চলেছে একটা দল। মনে রাখবেন সব ধর্মের মানুষ সমান। এই দেশ, বাংলা সবার।'
কেউ চিন্তা করবেন না। সবাই ত্রাণের টাকা পাবেন। বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম কুৎসা রটাচ্ছে। ১০ কোটি মানুষকে রেশন দেওয়া হচ্ছে। কোথায় এমন রাজ্য পাবেন যেখানে এরকম হয়। তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে সারা জীবন বিনা মূল্যে রেশন পাবেন। আজ ঘোষণা করে গেলাম: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
'চক্রান্তকে দূরে ঠেলে আগামী বছর ঐতিহাসিক ফলাফলের পর ঐতিহাসিক ২১ জুলাইয়ের সভা হবে। তার প্রস্তুতি আজ থেকেই শুরু করলাম।' ভার্চুয়াল সভার প্রথমেই বললেন তৃণমূল নেত্রী।
বিজেপির প্রহসন দিবস পালন
ছবি-শশী ঘোষ
ধর্মতলায় অস্থায়ী শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপণ করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ছিলেন, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, অরূপ বিশ্বাস, শান্তনু সেন।
ছবি- শশী ঘোষ