কাঠুয়া গণধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, এই রায় রাজ্য পুলিশের মনোবল বাড়াবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে পিডিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো দলগুলি থেকে শুরু করে কংগ্রেস পর্যন্ত। এই রায় নির্যাতিতা ও মৃতা শিশুর পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার পক্ষে সহায়ক হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলি।
তবে রাজ্য বিজেপি যে এই রায়ে অখুশি, তা তারা গোপন করেনি। পাঠানকোট আদালতে মামলা হস্তান্তরের ফলে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হল বলেই মনে করছেন তাঁরা, এমনটাই জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি মুখপাত্র সুনীল শেঠী।
আরও পড়ুন, পাঠানকোট আদালতে স্থানান্তরিত কাঠুয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা, সিবিআই তদন্তের দাবি নাকচ করল শীর্ষ আদালত
এ রাজ্যে যে যথাযথ বিচার সম্ভব বলে রাজ্য সরকার জানানো সত্ত্বেও মামলা স্থানান্তরের ফলে শুধু সরকারের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ হল এমন নয়, রাজ্যের নাগরিক সমাজের ওপরও অনাস্থা প্রদর্শন করা হল বলে মনে করছেন তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সোমবারই ট্যুইট করেছেন মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। এই রায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মনোবল বৃদ্ধি করবে, যে পুলিশবাহিনী সমস্ত রকম প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়েও মৃতার পরিবারের ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত করার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করেছে।’’
আরও পড়ুন, কর্নাটকে ‘মৃত’ বিজেপি নেতা অশোক পূজারি আজও বহাল তবিয়তে বেঁচে!
পিডিপি নেত্রী তথা সরকারের মুখপাত্র নঈম আখতার বলেছেন, সিবিআই তদন্তের দাবি নাকচ করার সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত যথাযথ। তিনি বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব আমরা নির্যাতিতার পরিবারকে ন্যায়বিচার দিতে পারব বলে আশা রাখছি।’’
জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসের সভাপতি গুলাম আহমেদ মির বলেছেন, ‘‘মৃত শিশুটিকে ন্যায় বিচার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। শীর্ষ আদালত যে সিদ্ধান্তই নিক, সে ব্যাপারে কারও কোনও আপত্তি থাকতে পারে না। সকলেই চাইছেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার হোক। পাঠানকোটে মামলা স্থানান্তরিত হলে যদি দুপক্ষই তাঁদের বক্তব্য যথাযথভাবে জানাতে পারেন, তাহলে সে নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’
সিবিআইয়ের হাতে মামলা হস্তান্তরের আবেদন নাকচ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাধারণ সম্পাদক আলি মহম্মদ সাগর।
আরও পড়ুন, আফগানিস্থানে আবার নিঁখোজ সাত ভারতীয়, অভিযোগের আঙুল তালিবানীদের দিকে
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে হতাশ অভিযুক্তের পরিবার-পরিজন। জম্মু-কাঠুয়া জাতীয় সড়কের ওপর অনশন আন্দোলন চালাচ্ছিলেন তাঁরা।
শীর্ষ আদালতের রায় শোনার পরে সনজি রামের স্ত্রী-কন্যাদের প্রথম প্রতিক্রিয়াই ছিল, ‘‘এরপর আমরা আর কার ওপরে ভরসা রাখব!’’
হিন্দু একতা মঞ্চের সম্পাদক কান্ত কুমার শর্মা এদিনের রায় শোনার পর তীব্র হতাশা ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, ‘‘একমাসের ওপর সময় ধরে আমরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, অথচ আমাদের কথা শোনার জন্য কেউই প্রস্তুত নয়।’’
হিন্দু একতা মঞ্চের সভাপতি তথা বিজেপির প্রাক্তন সম্পাদক বিজয় কুমার শর্মা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শেষ আশাটুকুও নিভে গেল।