Advertisment

সোমনাথের প্রয়াণে দলমত নির্বিশেষে অভিভাবকহীন ভারতের রাজনৈতিক মহল

দলমত নির্বিশেষে প্রাক্তন লোকসভা অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছে সারা ভারতের রাজনৈতিক মহল। সবার কাছেই তিনি ছিলেন মহীরুহের সমান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দলমত নির্বিশেষে প্রাক্তন লোকসভা অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছে সারা ভারতের রাজনৈতিক মহল। রইল তার কিছু নমুনা:

Advertisment


গুরুদাস দাশগুপ্ত (সিপিআই নেতা): দক্ষ পার্লামেন্টিরিয়ান বলতে যা বোঝায় তাই ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন।সব দলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল তাঁর। অন্য দলের অধিকার খর্ব করতেন না। সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করতেন। তিনি চাইতেন অল্প সময় নয়, দীর্ঘ সময় ধরে সংসদ চলুক। তিনি ভাবতেন সংসদ দেশের প্রতিচ্ছবি।

;
বাসুদেব আচারিয়া (সিপিএম নেতা): সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সংসদীয় ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের স্বার্থে কি ভাবে সংসদ পরিচালনা করা হয়, তা তিনি জানতেন। আমি লোকসভার নেতা থাকার সময়ও তাঁর কাছ থেকে অনেক পরামর্শ নিয়েছি। সংসদের নিয়ম-শৃঙ্খলা তাঁর কাছ থেকে শেখার ছিল। নিরপেক্ষ ভাবে সংসদ পরিচালনা করতেন। লোকসভা টিভি তাঁর সৃষ্টি। এখন সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর যে আক্রমন চলছে তাতে এই সময় তাঁর চলে যাওয়া বিরাট ক্ষতি।


সূর্যকান্ত মিশ্র (সিপিএম রাজ্য সম্পাদক): নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না কিন্তু তিনি ছিলেন দলের উর্দ্ধে। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা বড় ক্ষতি। পাঁচ বছরের অধ্যক্ষকালে তিনি রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে গিয়েছিলেন।

ক্ষিতি গোস্বামী (আরএসপি নেতা): সোমনাথ  চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু দুঃখজনক। একজন অভিভাবককে আমরা হারালাম। বামপন্থীরাও একজন অভিভাবককে হারাল। তিনি সংসদের স্পিকার শুধু ছিলেন না। বিশিষ্ট আইনজীবী ছিলেন। যে কোনো বাম দলের আইনি লড়াই লড়তেন হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে। সেক্ষেত্রে কোনও আর্থিক চাহিদা ছিল না। খুব বড় মনের মানুষ ছিলেন। বিশাল দেহের মতই ছিল তাঁর বড় মন। তিনি প্রকৃতই বামপন্থী আদর্শের মানুষ ছিলেন। আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। নিয়মিত যাতায়াত ছিল। কখনও ভাবিনি তিনি অন্য দলের মানুষ।


নরেন চট্টোপাধ্যায় (ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা): বামপন্থী রাজনীতির বাইরেও তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। সোমনাথবাবুর বোলপুরের বাড়িতে নানা সময়ে গিয়েছি। পরামর্শ নিয়েছি, উপদেশ পেয়েছি। দিল্লিতে যখন তাঁর একটি বই উদ্বোধন হয়েছিল তখন অনেকেই তাঁর পাশে ছিলেন না। আমি একমাত্র রাজনৈতিক নেতা সোমনাথবাবুর পাশে ছিলাম। তখন কোনও বামপন্থী নেতা বা বুদ্ধিজীবী হাজির হননি। এত বড় মনের মানুষ এখন আর পাওয়া যায় না।

মহম্মদ সেলিম (সিপিম সাংসদ): দলের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। আমার সঙ্গে তাঁর পিতা-পূত্রের সম্পর্ক ছিল। আমি আমার বাবাকে হারালাম। মানুষের অধিকার রক্ষা করতেন যে কোনও মূল্যে।

সুব্রত মুখোপাধ্যায় (রাজ্য মন্ত্রী): অত্যন্ত বড় মাপের রাজনীতিক ছিলেন। ছিলেন বড় মনের মানুষ। কমিউনিস্ট ছিলেন, তবে উদার মানসিকতার মানুষ ছিলেন। সিপিএম এমন এক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বকে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। সোমনাথবাবুর মৃত্যু ভারতের রাজনীতিতে অপূরনীয় ক্ষতি।

অধীর চৌধুরী (কংগ্রেস নেতা): উনি ছিলেন যাকে বলা যায় কলোসাস, এক মহীরুহ। রাজনীতির চোরাগলিতে কোনোদিন বিচরণ করেন নি। আমাদের কতবার ধমকে সংশোধন করেছেন লোকসভায়। এবং দলমত নির্বিশেষে আমরা মাথা পেতে নিতাম তাঁর তিরস্কার। সবসময় কিছু না কিছু শিখতাম। তিনি ছিলেন আমাদের পিতার মতন। দেশের অপূরণীয় ক্ষতি।

দিলীপ ঘোষ (বিজেপি রাজ্য সভাপতি): তাঁর অবদান নিয়ে কোনও সন্দহ নেই। রাজনীতিতে প্রবাদপ্রতিম মানুষ। অাদর্শগত বিরোধ থাকলেও মনে রাখতে হবে তিনি দশবার জনগণের ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। নৃপেন চক্রবর্তীকে যেভাবে ফিরিয়ে নিল, সেভাবেই দল তাঁকেও ফিরিয়ে নিতেই পারত। দল তাড়িয়ে দিলেও কিন্তু তিনি অন্য দলে কখনো যাননি।

CPIM west bengal politics lok sabha 2019 somnath chatterjee
Advertisment