আর কথায় নয়, কাজিয়া শুরু হয়েছিল পোস্ট ঘিরে। শেষ পর্যন্ত দলের মহাসচিবের কড়া হুঁশিয়ারিতে সেই যুদ্ধে ইতি ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের বিবদমান দুই শিবির। ঠিক তারপরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই টুইটারে কটাক্ষ ছুরে দিলেন বঙ্গ বিজেপির ভারপ্রাপ্ত নেতা অমিত মালব্য। পাল্টা টুইটেই মালব্যর কাছে পদ্ম শিবিরের 'বিদ্রোহী' নেতৃত্ব ও 'কামিনীকাঞ্চন' নিয়ে ব্যাখ্যা চাইলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
কী লিখেছেন অমিত মালব্য?
করোনা আবহে পুরনিগম ভোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিজেপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ভোট পিছনের দাবি তোলে। কিন্তু তখন ভোট পিছতে রাজি ছিল না রাজ্য সরকার। কমিশনও রাজ্যের সঙ্গে সহমত ছিল। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষাপটেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা আবহে ভোট পিছিয়ে দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছিলেন।
যা নিয়েও বিতর্ক বাধে। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার যখন ভোট না পিছতে অনড় তখন দলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'-এর মুখে ভিন্ন সুর নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়। সেই বিতর্কে ঘি দেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভইষেকের 'ডায়মন্ড হারবার' মডেল নিয়ে সোচ্চার হন। সাফ জানিয়ে দেন, 'করোনাকালেই দেশের পাঁচ রাজ্যে ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন, তাহলে অভিষেক কেন ওখানে প্রতিবাদ জানাননি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ও দল চালান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই সবাই ভোট দিয়েছেন। দলের যতগুলি পদধিকারি হোন না কেন তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ভোট পেয়েছেন। আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ভোট পেয়েছি। মানুষের মন বোঝা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়ে কে বেশি বুঝবেন? সরকার ও দলের নীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেন।'
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের ভিডিও তুলে অমিত তৃণমূলকে নিশানা করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন যে, 'তৃণণূল সাংসদই অন্য কেউ নন, বলছেন মমতা ব্যানার্জীই সরকার ও দল চালান। সবাই মমতার জন্যই ভোট পেয়েছি। তাহলে কী মমতা ব্যানার্জী উচ্চাকাঙ্খী ভাইপোর ডানা কাটতে চাইছেন?'
এরপরই বিজেপির অন্দরের কোন্দলকে পাল্টা হাতিয়ার করে অমিত মালব্যকে তোপ দাগেন কুণাল ঘোষ।
টইটে কী লিখেছেন কুণাল ঘোষ?
'বিদ্রোহী বিজেপি নেতৃত্বের সাংবাদিক বৈঠক ও তথাগত রায়ের কামিনীকাঞ্চণের তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিন অমিত মালব্য। নিজের দলের দুর্নীতি থেকে মুখ ঘোরাতেই এখন মিথ্যা পোস্ট করছেন। স্বাভাবিক জীবনের সমস্ত স্পন্দন সহ তৃণমূল একটি খুব সুখী পরিবার।'
শাসক তৃণমূল থেকে বিরোধী বিজেপি। সব দলেই এখন গৃহযুদ্ধ ঘিরে টানাপোড়েন অব্যাহত। যাকে পুঁজি করেই একে অপরকে নিশানা করছে যুযুধান তৃণমূল, বিজেপি। যা নিয়েই আপাতত সরগরম বঙ্গ রাজনীতি।