একুশের ভোটের পর এই প্রথম বাংলায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু, আগেই রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে তাঁর দরবারে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের রিপোর্ট জমা পড়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই শিলিগুড়ির দলীয় সভায় শাহর মুখে উঠে এল বাংলার ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস প্রসঙ্গে। যা নিয়ে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পদ্ম বাহিনীর লড়াইয়ের হুঁশিয়ারিও দিলেন অমিত শাহ।
এ দিন শিলিগুড়ির দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, 'রাজ্যের মানুষ ভোট দিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছে। কিন্তু, তিনবার ক্ষমতা পেয়েও শোধরাননি মমতাদি। আমরা এক বছর সময় দিয়েছিলাম। কাজ হয়নি। ভাববেন না যে বিজেপি এর বিরুদ্ধে লড়বে না। সিন্ডিকেটরাজ, হিংসা বন্ধ না হলে বিজেপি শেষ পর্যন্ত লড়াই চালাবে।'
গতবছরের ভোটের প্রচারে 'সোনার বাংলা' গঠনের ডাক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। ২০০ আসন পেয়ে সরকার গড়ার স্বপ্নে বিভোর ছিল তারা। কিন্তু ভোটের ফলে ধরাশায়ী হয় বিজেপি। ২০০-র অনেক আগে, ৭৭ আসনেই থমকে গিয়েছিল বিজেপির দৌড়। তারপর একাধিক বিধায়কের ঘরওয়াপসি ঘটেছে। কিন্তু, ২০১৬ সালের ভোটে ৩ আসন থেকে পরের পাঁচ বছরে ৭৭ আসনে জয়ী হওয়াকে এ রাজ্য়ে বিজেপির বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন অমিত শাহ। এ দিন তিনি বলেছেন, 'মানুষের রায়ে ৩ থেকে বেড়ে বিজেপি বাংলায় ৭৭ আসন পেয়েছে। বিশ্বাস রাখুন, মোদীজির নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ার কাজ জারি থাকবে।'
বগটুই, হাঁসখালির ঘটনা উল্লেখ করে বাংলায় আইনের শাসনের বদলে, শাসকের আইন কার্যকর রয়েছে বলে দাবি করেন অমিত শাহ। তাঁর প্রশ্ন, 'দেশের কোথাউ কিছু হলেই তৃণমূল প্রতিনিধি দল পাঠায়। কিন্তু বগটুই গণহত্যা, হাঁসখালিতে নাবালিকার ধর্ষণ-মৃত্যুর পর কেন মমতাদি সেখানে প্রতিনিধিদের পাঠালেন না। ওরা কী আপনার লোক নয়?'
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল ভবনে পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'উনি বাজে কথা বলছেন। উনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলা আর বাকি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা দেখা ওনার কাজ নয়। সীমান্ত দিয়ে অনুব্রবেশ রোখা, গরু পাচার বন্ধ করা ওনার কাজ। সেটাই করুন।'
লড়াইয়ের বার্তা দিলেন অমিত শাহ। কৌশলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বেসামাল বঙ্গ বিজেপিকে তৃণমূল সরকার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমেই কী একসূত্রে বাঁধতে চাইলেন শাহ। এই প্রশ্নই এখন চর্চায়।