এবার রাজ্যের তপসিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণিদের(ওবিসি) কাছে টানতে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে পদ্ম শিবির। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে কলকাতা সংলগ্ন দলের জেলা সভাপতিদের নিয়ে এক দফা ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামও করেছে দলীয় নেতৃত্ব। সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অংশ থেকে নেতৃত্ব তুলে আনার উদ্যোগ নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরা, তাঁদের মধ্যে থেকে প্রতিভার অন্বেষণ করবে বঙ্গ বিজেপি। সূত্রের খবর, এরাজ্যের দুই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দায়িত্ব দিয়েছে দল। এছাড়া জেলা ভিত্তিক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। জেলা সভাপতিদের নেতৃত্বে ওই কমিটি কাজ করবে।
আরও পড়ুন- রাজ্যে এসে মতুয়া-আদিবাসীদের বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সারবেন অমিত শাহ
দড়জায় কড়া নেড়ে ফেলেছে ২০২১ বিধানসভার নির্বাচন। ইতিমধ্যে রাজ্যের মতুয়া ভোট ব্যাংকের ব্যাপক বিভাজন হয়েছে। মতুয়াদের বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসকে একচেটিয়া সমর্থন করে আসছিল। বিগত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া শিবিরের একটা অংশ বিজেপির দিকে ঝোঁকে। এদিকে আদিবাসী সমাজকে আরও কাছে টানতে বর্ধমানের পরিবর্তে বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করবেন, তা অনেকটাই পরিস্কার। একদিকে আদিবাসী অন্যদিকে মতুয়া সম্প্রদায়ের পাশে বিজেপি রয়েছে সে বার্তা দিতেই অমিত শাহের সফর কার্যকরী ভূমিকা নেবে তা প্রায় ঘোষিত। কিন্তু এখানেই থেমে থাকছে না পদ্মশিবির। একেবারে সাংগঠনিক ভাবে লাগাতার সামাজিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে দল।
মোটের ওপর রাজ্যে ভোটারদের ৪০ শতাংশ তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি ও পিছিয়ে পড়া(ওবিসি) সম্প্রদায়ভুক্ত। এই অংশকে কাছে পেতেই নানা কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে জেলার সভাপতিদের নেতৃত্বে কাজ হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে দলীয় নেতৃত্ব। কীভাবে কাজ হবে সে বিষয়ে জেলা সভাপতিদের একাংশকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, এরাজ্যে এই কর্মসূচির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন ও কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাকে। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম নিজে তপশিলি জাতিভুক্ত ও সামাজিক কাজকর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।
আরও পড়ুন- শাহের পাল্টা, মতুয়া-আদিবাসী মন জয়ে ঢালাও ঘোষণা মমতার
জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচিকে রূপায়ন করতে জেলা স্তরেও কমিটি গঠন করা হবে। শুধু ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন নয়, তারপরেও চলবে এই সামাজিক কর্মসূচি। দলের নির্দেশ, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মেলামেশা বাড়াতে হবে। তাঁদের অসুবিধার কথা শুনতে হবে। তাঁরা রেশন বা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কীনা সেই খোঁজ নিতে হবে। না পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সব সম্প্রদায়ের ভাষা, সংস্কৃতির বিকাশের ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে। তপশিলি জাতি বা উপজাতিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিভার অন্বেষণ করবে এই কমিটি। এই সব শ্রেণির সামাজিক উন্নয়নের জন্য অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অনেকেই বহু দিন ধরে আন্দোলন করছেন। তাঁদের সামনের সারিতে তুলে আনার লক্ষ্য নিয়েছে পদ্মশিবির। সূত্রের খবর, দিল্লির নির্দেশে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। মনে করা হচ্ছে যার প্রথম ধাপ শুরু হবে আমিত শাহর সফরের মধ্য দিয়ে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন