গত ২৩ ডিসেম্বর, দিল্লির রামলীলা ময়দানের সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকারের এনআরসি লাগুর কোনও পরিকল্পনা নেই। এপ্রসঙ্গে সরকার বা মন্ত্রিসভায় কোনও আলোচনাও হয়নি।
গত ২৩ ডিসেম্বর, দিল্লির রামলীলা ময়দানের সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকারের এনআরসি লাগুর কোনও পরিকল্পনা নেই। এপ্রসঙ্গে সরকার বা মন্ত্রিসভায় কোনও আলোচনাও হয়নি।
সিএএ বিতর্কের মাঝে এনআরসি নিয়ে এখন কোনও আলোচনা চাইছে না বিজেপি নেতৃত্ব। দলের সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্যেই তা আরও একবার স্পষ্ট। তাহলে কী ঠান্ডা ঘরে পাঠান হল বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি? এবিপি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য টেনে অমিত শাহ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন এখনই এনআরসি লাগু হচ্ছে না। আমিও বলছি, সরকারের এখনই এনআরসি লাগুর কোনও পরিকল্পনা নেই।' সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে দেশবাসীকে বিরোধীরা বিভ্রান্ত করছে বলেও এদিন তোপ দাগেন গেরুয়া শিবিরের 'চাণক্য'।
Advertisment
গত ২৩ ডিসেম্বর, দিল্লির রামলীলা ময়দানের সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকারের এনআরসি লাগুর কোনও পরিকল্পনা নেই। এপ্রসঙ্গে সরকার বা মন্ত্রিসভায় কোনও আলোচনাও হয়নি। তবে সিএএ-এর পক্ষে সোচ্চার ছিলেন তিনি। তবে, এরপরও বিভ্রান্তি দূর হয়নি। পদ্ম বাহিনীর একাধিক নেতা-মন্ত্রীর এনআরসি ঘিরের নানা মন্তব্যে নানা জল্পনা দানা বাঁধে। বিরোধীরাও সরব হয় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে।
জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমানে সিএএ বিরোধের মাঝেই এখন বিজেপির কাঁটা এনআরসি। ইতিমধ্যেই সিএএ-এর সমর্থনে প্রচার করতে মাঠে নেমেছেন দলের নেতা, কর্মীরা। কিন্তু, তাতেও বিক্ষোভ কমছে না। তাই বারে বারে মুখ খুলে বিভ্রান্তি কাটানোর চেষ্টায় অমিত শাহ। সাক্ষাৎকারে তিনি আবারও বলেন, 'সিএএ ও এনআরসি দুটি পৃথক বিষয়। নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে এনআরসি করা যাবে না।' বিরোধীদের মিথ্য়া রটনায় কান না দিয়ে আইনটিকে খতিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন বিজেপি সভাপতি। কংগ্রেসের রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে নিশানা করে তাঁর প্রশ্ন, 'ডাহা মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আপনারা দেখিয়েদিন কোন আইনের দ্বারা গরীব মানুষদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে?'
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাসের পর থেকে গোটা দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। কখনও কখনও তা হিংসার রূপ নিচ্ছে। বেড়়ে চলা এই প্রতিবাদ প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, 'বিরোধী শিবির সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের কাছে আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এতেই মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এইভাবে বিরোধীরা অপপ্রচার করবে তা আমরা আন্দাজ করতে পারিনি।'
আসাম থেকে উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক- বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই সিএএ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ তুঙ্গে। তাহলে কী বিজেপির তৈরি আইন সেই সব রাজ্যের বাসিন্দারাই বর্জন করছেন? বিক্ষোভের গায়ে কংগ্রেসের ঘাড়া চাপিয়ে গেরুয়া দলের সভাপতি বলেন, 'কেন এইসব হচ্ছে তার জবাব কংগ্রেস দিতে পারবে। কারা প্রতিবাদে ইন্ধন দিচ্ছে তা সবাই বুঝতে পারছেন।'
অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী
বাংলা, কেরালা সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে এনপিআর হতে দেবে না। এনপিআরের নথি ঘিরে বিজেপি ভেদাভেদের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এনপিআর কংগ্রেস সরকার করেছিল। এটায় কোনও নতুনত্ব নেই। কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার ও নাগরিকত্ব এর ফলে বিপদে পড়বে না। কোনও প্রামাণ্য নথি চাওয়া হয়নি, কেবল তথ্য জানাতে হবে সকলকে।' তিনি আবারও বলেন, 'এনপিআরের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই।'
সিএএ-এনআরসি প্রতিবাদ আন্দোলন দমনে পুলিশ অত্যাচার করেছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। এক্ষেত্রে অবশ্য পুলিশের পাশেই দাঁড়িয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিরোধী শিবির বলছে, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও ঝাড়খণ্ডে সিএএ-এনআরসির জেরেই হারের মুখ দেখেছে বিজেপি। পরাজয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিলেও কারণ নিয়ে সহমত নন শাহ। বিষয়টি দলের অভ্যন্তরে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।