কোচবিহারে সভা করতে রাজ্যে আসছেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বিকল্প হিসেবে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করবেন তিনি। এদিকে কোচবিহারে বিজেপির কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় জানান, "ঝিনাইডাঙ্গার মাঠে সভা হবে। কিন্তু আমাদের কর্মী সমর্থকদের কোচবিহারে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। দিনহাটা, মাথাভাঙা, সিতাই, জলপাইগুড়ি, ফালাকাটা, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মী সমর্থকদের গাড়ি আটকাচ্ছে পুলিশ।" স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ওই কর্মীদের বেশ কিছু সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের ফলে বিজেপির রথযাত্রা ও সভা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। প্রথমে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সভা হবে বলেই জোর দিয়ে বলেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আদালতের রায়ের ওপর সব কিছু নির্ভর করবে। সেদিকেও বিপত্তি, কারণ খবরে প্রকাশ, আজ বসছে না আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ, যার দিকে কার্যত কাল থেকে চেয়ে আছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: জমি দিয়েছেন অমিতের সভার জন্য, হাসিমুখে ত্যাগ স্বীকার কুন্ডু পরিবারের
আজ সকাল থেকেই সভার জন্য নির্দিষ্ট মাঠে তেমন একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। বিজেপি নেতাদের একাংশের বক্তব্য, অমিত শাহ না এলেও সভা হবে। সভার সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ। গতকাল দিলীপবাবু বলেছিলেন, এই রথযাত্রা এবং সভার পেছনে ইতিমধ্যেই "লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে"। কাজেই তার নিট ফল যদি হয় শূন্য, তাতে আর কিছু না হোক, দলের মুখ যে বেশ ভালোমতোই পুড়বে, সেকথা রাজ্য নেতৃত্বের মাথায় রয়েছে।
বিশেষ করে সেইসব কর্মীদের চোখে, যাঁরা কেউ সাত দিন, কেউ দুদিন, কেউ তিনদিন ধরে সারা দিনরাত ঝিনাইডাঙ্গার সভার মাঠ পাহারা দিচ্ছেন। নিরাপত্তার যাবতীয় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। আদালত কী বলছে, অন্য দলের নেতারা কী বলছেন, এসবে কর্ণপাত করছেন না। বৃহস্পতিবার রাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ঝিনাইডাঙ্গায় মঞ্চ বাঁধার কাজ সম্পূর্ণ। কর্মসূচি অনুযায়ী, এই মাঠেই আসার কথা ছিল অমিত শাহর, রথযাত্রার সূচনা করতে।
গতকাল রাত ১২টার পরও দেখা যায়, প্রায় একশো কর্মী রয়েছেন সভাস্থলে। বেশ কয়েকজন বড় ব্যাটারির টর্চ নিয়ে ঘুরছেন মাঠে। খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে তাঁদের জন্য। বিজেপি কর্মী প্রসেনজিত মল্লিক বলেন, "গত কয়েকদিন ধরেই রাত পাহারা দিচ্ছি। কোচবিহার শহরে কোনও মাঠ পাওয়া যায় নি। এটাও দলেরই এক কর্মী দিয়েছেন। তার ওপর নানা বাধা রয়েছে। সেই কারণে পাহারা দেওয়া খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।" আরেক স্থানীয় বিজেপি কর্মী নিরঞ্জিত রায় বলছিলেন, "কাল অমিতজি আসবেন এই মাঠে। কেই যদি মঞ্চের ক্ষতি করে দেয়? অনেকেই সভা পন্ড করে দিতে চাইছে। প্রস্তুতি সারা, কোনওভাবে যাতে আর ব্যাঘাত না ঘটে, তাই আজ রাতে এখানেই থাকবো।"
বিজেপির বেশিরভাগ কর্মীর বক্তব্য, "এই রথযাত্রা ও সভা যাতে না হয় তার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে। তাছাড়া মাঠের মধ্যে পুলিশের কোনও দেখা নেই। তারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের সভামঞ্চ আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।"
Read in English here