মালদায় অমিত শাহের সভা হচ্ছে এক সিপিএম কর্মীর জমিতে। এ নিয়ে বেশ আলোড়নও তৈরি হয়েছে। তৃণমূল এ ঘটনায় তাদের রাম-বাম জোট সম্পর্কিত প্রচার আরও একবার সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
ঘটনা হল, মালদা শহর ও সন্নিহিত অঞ্চলে বড়সড় রাজনৈতিক সমাবেশ করার উপযুক্ত জায়গা প্রায় নেইই। ফলে এ ধরনের সভা করতে হয় ব্যক্তিগত জমিতেই। তার জন্য জমির মালিককে অনুরোধ করতে হয়, সেই জমিতে সভা করার জন্য। কোনও সময়ে অনুমতি মেলে, কোনও সময়ে মেলে না। এক জায়গায় অনুমতি না মিললে অন্য জায়গায় সভা করতে হয়। এটাই দস্তুর।
আরও পড়ুন, আমার বাড়ির ছাদে সভা করুক বিজেপি, আহ্বান অনুব্রতর
মালদায় অমিত শাহের সভা হচ্ছে যাঁর জমিতে, সেই তরুণ ঘোষ দীর্ঘদিনের সিপিএম কর্মী। এক সময়ে লোকাল কমিটির সম্পাদকও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিছুদিন আগে স্ত্রীবিয়োগের পর সে পদ ছেড়ে দেন তিনি। এখন ৬০ বছরের তরুণবাবুর বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা এবং কন্যা।
জানা গিয়েছে, তরুণবাবু যে স্কুলে পড়তেন, সে স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন কমিটির সদস্যরা অনেকেই তৎকালে ছিলেন আরএসএস ভাবধারা অনুপ্রাণিত। বিদ্যার্থী থাকাকালীন আরএসএস শিবিরেও অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। পরবর্তী কালে তিনি সিপিএমের সংস্রবে আসেন। এবারের সভার আগে তাঁর প্রাক্তন স্কুলের বর্তমান শিক্ষকরা অমিত শাহের সভার জমি দেওয়ার জন্য তরুণ ঘোষের কাছে অনুরোধ জানান। রাজিও হয়ে যান তিনি। জানা গিয়েছে, এ ব্যাপারে স্থানীয় সিপিএম নেতাদের কাছে তিনি পরামর্শ নিয়েছিলেন। তাঁরা মালদা জেলার সাধারণ দস্তুরের কথা জানায় এ ব্যাপারে আপত্তি করেন নি।
গোটা বিষয়টিতে অবাক হওয়ার মত কিছু দেখছেন না সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর মতে, "এটাই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ঐতিহ্য। এসব নিয়ে কথা হচ্ছে গত সাত বছর ধরে। তার আগে সিপিএম-এর জমিতে তৃণমূল সভা করেছে, কংগ্রেসের জমিতে সিপিএম সভা করেছে। এ চিরকাল হয়ে এসেছে। রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক সভা করার অধিকার নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না।" সিপিএম কর্মীর জমিতে অমিত শাহের সভা নিয়ে রাম-বাম জোটের কথা যে বারবার উঠে আসছে, সে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সুজনবাবু বলেন, "যাদের এসব নিয়ে প্রশ্ন করার ইচ্ছে হয়েছে, তারা প্রশ্ন করছে। যদি কেউ না বোঝে যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে যে দল সবচেয়ে এককাট্টা হয়ে লড়াই করছে, সে দলের নাম সিপিএম, তাকে তাহলে আলাদা করে সে কথা বোঝাবার কোনও কারণ আমাদের নেই।"