'এনপিআরের ফলে কেউ সন্দেহভাজন বলে চিহ্নিত হবেন না। লাগবে না কোনও নথি।' রাজ্যসভায় এই আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সিএএ-এনপিআর নিয়ে সংসদে তিনি যেকোনও সময় আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলেও বিরোধীদের জানান শাহ।
ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার নিয়ে সংশয়ের শেষ নেই। এই বিষয়ে একাধিক আপত্তি জানিয়ে গোটা প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার শাহ রাজ্যসভায় বলেন, 'কোনও ব্যক্তি এনপিআরে যতটুক তথ্য দিতে চান, ততটুকুই দেবেন। কেউ কোনও তথ্য দিতে না চাইলে সে বিষয়ে কোনও প্রশ্ন করা হবে না। আর তথ্য দিতে না পারার জন্য কাউকে সন্দেহজনক বা ডাউটফুল বলেও চিহ্নিত করা হবে না।'
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনেরসূত্র ধরে রাজ্যসভায় এনপিআরের প্রসঙ্গ উঠে আসে। রাজ্যসভায় দিল্লি সংঘর্ষ নিয়ে বিতর্কের জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময় কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিবালকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, 'বিরোধীরা যে বলছে সিএএ সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে, সিএএ-র কোথায় এ কথা লেখা আছে?' জবাবে কংগ্রেস নেতা বলেন, 'আমরা বলছি না, সিএএ কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে। কিন্তু, এই আইন 'গরিব ও দলিত বিরোধী'। এরপরই সিবাল বলেন, 'নতুন এনপিআরে ১০টা অতিরিক্ত প্রশ্ন করা হবে। জবাব না দিতে পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সন্দেহজনক (ডি) বলে চিহ্নিত করা হবে। সিএএ-র মাধ্যমে এই সন্দেহজনকদের নিশানা কর হবে।'
আরও পড়ুন: এনপিআর-এ বাবা-মায়ের জন্ম তথ্য প্রয়োজন: কেন্দ্র
সিবালের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দেন এনপিআর কাউকে 'সন্দেহভাজন' বলে চিহ্নিত করবে না। বলেন, 'এ বিষয়ে কোনও বিরোধী দলের সাংসদের কোনও বিভ্রান্তি থাকলে আমি আগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।'
এর আগে গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্য়ানন্দ রাই কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির লিখিত প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন যে, এনপিআরের মাধ্যমে কাউকেই সন্দেহভাজন বলে চিহ্নিত করা হবে না।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে এনপিআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। এই প্রক্রিয়াকে জনগণনার অংশ বললেও বাম শাসিত কেরালা, তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গ জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যে এনপিআর করতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে পাঞ্জাব, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, পুদুচেরি। এমনকী এনডিএ শাসিত বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারও এনপিআর লাগু করতে বেঁকে বসেছে। সে প্রেক্ষাপটে সংসদে দাঁড়িয়ে শাহের এনপিআর আশ্বাস অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
নাগরিকত্ব বিধি অনুশারে এনআরসি প্রক্রিয়া চালু হলেই এনপিআর তথ্য যাচাইকরণ শুরু হবে। এনপিআর প্রক্রিয়ায় দেশের সব 'বাসিন্দাদের' তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং এনআরসি প্রক্রিয়া চলাকালীন এই তথ্য যাচাই করা হবে এবং সন্দেহভাজন নাগরিকদের চিহ্নিত করা হবে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০০৩ এর অধীনে এনপিআর এনআরসি প্রক্রিয়ারই অংশ।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন