সিএএ কার্যকর করা নিয়ে প্রবল সংশয়ে মতুয়ারা । নাগরিকত্ব আইন দ্রুত প্রয়োগের জন্য কিছু দিন ধরেই দলের উপরে চাপ বাড়াচ্ছিলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। চাপের কথা বলে দলের কর্মসূচি এড়িয়ে চলছিলেন। পরে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঠাকুরনগরে এসে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করুন।
'বোসুরো' শান্তনুর সেই দাবি মেনে নিয়েছে দল। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সফরে এসে ঠাকুরনদরে যাচ্ছেন অমিত শাহ। সেখানেই সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নিজেই সেকথা ঘোষণা করলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। বললেন, 'নাগরিকত্ব বিল আইন হয়েছে। তা প্রয়োগ করতে কিছুটা সময় লাগবেই। মতুয়াদের সংশয় দূর করতে অমিত শাহ ৩০ জানুয়ারি আসছেন। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। আমরা আনন্দিত।'
সম্প্রতি, লাগরিকত্ব আইন হলেও কেন তা লাগু হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। দলের বিরুদ্ধেই চড়া সুরে সরব হন তিনি। এমনকী তাঁর হুঁশিয়ারিতে দল ছাড়র ইঙ্গিতও মিলেছিল।
আরও পড়ুন- ‘আমি বিজেপিতেই আছি’, বিদ্রোহে ইতি টেনে বললেন সাংসদ শান্তনু
আইনে পরিণত হলেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু না হওয়ায় মতুয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত নয় বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ শান্ত ঠাকুর। দ্রুত আইন কার্যকরী করার দাবি জানান তিনি। এর মধ্যেই কোভিড পরিস্থিতি মিটলে সিএএ লাগু হবে বলে বঙ্গ সফরে এসে জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। আর এতেই আরও ‘বেসুরো’ হতে দেখা যায় বনগাঁর সাংসদকে। কোভিডের সঙ্গে সিএএ লাগুর কোনও সম্পর্ক নেই বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ান তিনি।
গেরুয়া শিবিরের এই কোন্দল প্রকাশ্যে আসতেই শান্তনুকে কাছে টানতে উদ্যোগ নেয় তৃণমূল। তাঁকে রাজ্যের শাসক দলে যোগদানের আহ্বান জানান তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই হস্তক্ষেপ করে বিজেপি নেতৃত্ব। মতায়া সংঘাধিপতি তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করেন গেরুয়া দলের নেতারা। এরপরই রাতারাতি সুর বদলে যায় বনগাঁর বিজেপি সাংসদের। বিদ্রোহী মনোভাব ছেড়ে তখন থেকেই তিনি নরমপন্থী। জানিয়েদিলেন দলেই রয়েছেন তিনি। দলত্যাগের জল্পনা ‘ভুয়ো’।
শান্তনু ঠাকুরের চড়া সুর গলে বরফ হওয়ার পথে। কিন্তু মতুয়াদের ক্ষতে কী প্রলেপ পড়বে? আপাতত সেদিকেই নজর রাজনৈতিক নমহলের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন