Advertisment

'টাকা ফেরান', আমফান ত্রাণ দুর্নীতিতে এক রব তৃণমূল-বিজেপির অন্দরে

'হ্যাঁ, বেশ কয়েকজনের বিজেপি সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের উচিত দোষীদের খুঁজে বার করা। কিন্তু শাসক-বিরোধী- সকলের ক্ষেত্রেই এক পদক্ষেপ হোক।'

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
বাংলায় লকডাউনে উড়ান বন্ধ।। ভাটপাড়ায় ফের গুলি, উত্তেজনা।। প্রয়াত অমলা শঙ্কর

আমফান ত্রাণ দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে বাংলাজুড়ে শোরগোল। লকডাউন বিধি উপেক্ষা করে মানুষ কোথাও চড়াও হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে, আবার কখনও পঞ্চায়েত দফতরে। বেশিরভাগ অভিযোগের তির শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সদস্যদের দিকে থাকলেও তালিকায় নাম ছিল বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রধানেরও। একে অন্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও চাপে পড়ে সব রাজনৈতিক দলই দলীয় সদস্যদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

Advertisment

ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ মিললে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তৃণমূলের তরফে পূর্বমেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলিতে দলের ২০০ সদস্যকে শোকজ নোটিস দেওয়া ধরানো হয়। ত্রাণ তহবিল তছরুপের দায়ে চলতি মাসের ৭ তারিখ ২৫জনকে বরখাস্ত করে তৃণমূল। এর মধ্যে রয়েছেন তিন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, সাত অঞ্চল সভাপতি, চার বুথ সভাপতি ও তিন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানও।

নন্দীগ্রামের শাসক দলের এক বরখাস্ত নেতা বনবিহারী পাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি। ত্রাণ কারা পাবেন সেই চতালিকা তৈরির সময় আমি ভুল করেছি।' দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কোনারিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বিকাশ বিশ্বাসের স্ত্রী, শাশুড়ী ত্রাণের টাকা পেয়েছেন। তবে, স্থানীয়দের চাপে বিকাশকে সেই অর্থ ফেরৎ দিতে হয়েছে। ত্রাণ না মেলায় বিকাশের হরিনাথপুরের দোতলা পাকা বাড়িতে হামলাও চলে।

শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ভুল স্বীকার করে বলেছেন, 'আইনি পথের পদক্ষেপ করা হবে। দল দুর্নীতি মেনে নেবে না। দল এদের অনেককেই বহিষ্কার করেছে, আইনি পথেই তাদের শাস্তি হবে।'

যদিও শাসক দলের এই পদক্ষেপকেই যথেষ্ট বলে মনে করেন না বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, 'তৃণমূল শুধু শোকজ নোটিস ধরাচ্ছে এবং বেশ কয়েকজনকে দুর্নীতির টাকা ফেরৎ দিতে বলেছে। কিন্তু এই অপরাধের তদন্তে কী হচ্ছে? এফআইআর দায়ের হওয়া প্রয়োজন, তারপর তদন্ত হোক।'

কিন্তু, জোড়া-ফুলের পাশাপাশি দুর্নীতির তালিকায় তো নাম রয়েছে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যদেরও। দিলীপ ঘোষের কথায়, 'হ্যাঁ, বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। দলের পাশাপাশি পুলিশের উচিত দোষীদের খুঁজে বার করা। এই পদক্ষেপ শাসক-বিরোধী সবার ক্ষেত্রে একই রকম হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।'

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার কোনারিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান পিন্টু বিশ্বাসের স্ত্রী ও পুত্র ত্রাণের অর্থ পেয়েছিলেন। অভিযোগ, আমফানে তাঁদের বাড়ি তেমন ক্ষতি না হওয়া সত্ত্বেও এই ত্রাণ পান তাঁরা। পরে অবশ্য সেই অর্থ ফেরাতে হয় প্রধানকে। তবে দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি পিন্টুবাবুর। তাঁর কথায়, 'তালিকায় আমার পরিবারের নাম কীভাবে এল সত্যিই জানি না। জীবনে কোনও দিন চুরি করিনি। কিন্তু, স্থানীয়রা যখন আমার দিকে দুর্নীতির আঙুল তুলেছেন তখন সিদ্ধান্ত নি যে ব্যাংকে আসা অর্থ ফিরিয়ে দেব।'

দুর্নীতির দাগ লেগেছে কোনারিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য কিরীটি বিশ্বাসের গায়েও। অভিযোগ, তাঁপ পুত্র বধূ দিপালী বিশ্বাস ত্রাণের টাকা পেয়েছেন। স্থানীয়দের বিক্ষোভের চাপে অবশ্য সেই টাকা শেষ পর্যন্ত ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

amphan Cpm dilip ghosh bjp tmc Mamata Banerjee
Advertisment