অন্ধ্র প্রদেশে সিবিআই কোনও মামলার তদন্ত করতে পারবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের তরফ থেকে যে সাধারণ সম্মতি দেওয়া থাকে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সরকারি কাজে রাজ্যে প্রবেশের জন্য আগে অন্ধ্র সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হবে সিবিআই-কে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর কারণ হিসেবে বর্তমানে সিবিআই নিয়ে যে বিতর্ক চলছে এবং সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, এজেন্সির উপর ভরসাহীনতার কারণ দেখিয়ে সম্মতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে অন্ধ্র সরকারের এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নাইডুর লড়াই ঘোষণা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। চন্দ্রবাবু অ-বিজেপি দলগুলি নিয়ে জোট তৈরির চেষ্টা করছেন।
চন্দ্রবাবু নাইডুর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সিবিআইয়ের মতন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।"একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "চন্দ্রবাবু নাইডু তো ভুল কিছু বলেননি। যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে আমাদেরও আইন ঘেঁটে দেখতে হবে।"
আরও পড়ুন: স্ট্যাচু বানাতে বানাতে ভোটের পর বিজেপিই স্ট্যাচু হয়ে যাবে: মমতা
গত ৮ নভেম্বর অন্ধ্র প্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্য সচিব এ আর অনুরাধা এ সম্পর্কিত নির্দেশনামা জারি করেছেন। সরকারি নির্দেশ নং ১৭৬-এ বলা হয়েছে, ১৯৪৬ সালের দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের পাঁচ নম্বর ধারায় বর্ণিত বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহৃত হল।
সিবিআই তৈরি হয়েছিল দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের আওতায়। সরকারি নির্দেশে সম্মতি প্রত্যাহারের ফলে সিবিআই এবার অন্ধ্র সরকারের অনুমতি ছাড়া সে রাজ্যে কোনও হানা দিতে পারবে না, এমনকি করতে পারবে না কোনও তদন্তও।
এর আগে চন্দ্রবাবু নাইডু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ কাজে লাগানো হচ্ছে সরকারি এজেন্সিগুলিকে। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যের বিরোধী নেতা ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিবিআই ও আয়কর বিভাগকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে।
সরকারি আধিকারিকরা বলছেন, রাজ্য সরকারের এই সম্মতি প্রত্যাহারের অধিকার রয়েছে। বর্তমানে অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনও বড়সড় সিবিআই মামলা নেই। মাংস রফতানিকারক মইন কুরেশি এবং ব্যবসায়ী সানা সতীশ বাবুর বিরুদ্ধে মামলা দিল্লিতে নথিভুক্ত রয়েছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের পাঁচ নম্বর ধারানুযায়ী সিবিআই যেমন দেশের সর্বত্র কাজ করতে পারে, তেমনই ওই একই আইনের ছ নম্বর ধারানুসারে কোনও একটি রাজ্যের অনুমতি ব্যতিরেকে সে রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না তারা।