আনিস খান শাসক দলের একাধিক কাজের প্রতিবাদে মুখর ছিলেন। পাড়া-প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, বেশ কয়েকবার এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে এই পড়ুয়া নাকি বচসাতেও জড়িয়েছিলেন। আনিসের মৃত্যুর পরে রটেছিল যে, শাসক দলের বিরুদ্ধ মত পোষণ করাতেই নাকি এই মর্মান্তিক পরিণতি। যা নিয়ে সরব বিরোদী শিবিরিও। কিন্তু, সোমবার এই দাবি নস্যাৎ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisment
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে আনিস খানের যোগাযোগ ছিল। ভোটেও নাকি জোড়া-ফুল শিবিরকে সহায়তা করেছিল আমতলার ওই পড়ুয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, 'আনিসের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ভালো ছিল। যাঁরা এখন টেলিভিশনে দর্শনধারী হতে গিয়েছেন, তাঁরা জানেন না, আমাদের সঙ্গে ও যোগাযোগ রাখতেন। ইলেকশনে আমাদের অনেক হেল্পও করেছিলেন। কাজেই ও আমাদের ফেভারিট ছিল।'
আনিস মৃত্যুর তদন্ত নিয়েও এ দিন মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, প্রতিবাদী পড়ুয়া আনিসের মৃত্যুর তদন্ত করবে ডিজি-র নেতৃত্বাধীন সিট। থাকবেন মুখ্যসচবি ও সিআইডি-ও। কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা ও তারপর দোষীদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কড়া শাস্তি হবে বলে মৃত ছাত্রের পরিবারকে আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'সরকার আনিসের মৃত্যুর কিনারায় নিরপেক্ষ তদন্ত করবে। জীবন ফেরাতে পারব না, কিন্তু নিরপেক্ষ তদন্ত যে হবে, সেটা বলতে পারি। এমনকী আমি দোষী হলে আমাকেও ছেড়ে কথা বলব না। পরিবারকে বলব আস্থা রাখতে। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট আমাকে জমা দেবে সিট। তারপর আইন মোতাবেক পদক্ষেপ হবে।'
তবে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কথায় আশ্বস্ত হয়নি আনিস খানের পরিবার। এখনও মৃত ছাত্রের বাবা, দাদা সহ পরিবারের সকলে সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়। আনিসের দাদা সাবির খানের কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রীর উপর আমাদের ভরসা আছে। কিন্তু ভাইয়ের খুনীদের ধরতে আমরা সিবিআই তদন্ত চাইছি। উনিও খুনীদের ধরার চেষ্টা করুন।'
আনিসের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতির রং আগেই লেগেছিল। এবার মুখ্যমন্ত্রীর দাবির পর সেই রং অন্য মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, পড়ুয়া তথা ছাত্র নেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট আইনজীবী কৌস্তব বাগচী স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলাটি গ্রহণ করেছে।