একটি আঞ্চলিক দল, সঙ্গে মাত্র ৬ জন বিধায়ক। তাই নিয়েই সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরম স্নেহধন্য নেতা। বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করলেন তৎকালীন রাজ্যপাল। বর্তমানে মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক আবার বোমা ফাটিয়েছেন। যে মন্তব্য ঘিরে অস্বস্তির কাঁটা পদ্মশিবিরে। নরেন্দ্র মোদীরও বটেই! ২০১৮ সালে কাশ্মীরে বিজেপি-পিডিপি জোট সরকারের পতনের পর কী হয়েছিল তা নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেছেন মালিক।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাস, অবিভক্ত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল তখন সত্যপাল মালিক। পিডিপির সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসে বিজেপি। তখন থেকেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সলতে পাকানো শুরু। এক বছর বাদেই যা বাস্তব হয়। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি তখন রাজভবনে ফ্যাক্স বার্তায় সরকার গঠনের দাবি জানান। সঙ্গে কংগ্রেস এবং চিরশত্রু ন্যাশনাল কনফারেন্সের সমর্থন রয়েছে বলে ৫৬ বিধায়ক নিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানান মেহবুবা। কিন্তু সেই ফ্যাক্স না কি রাজভবন পায়নি বলে খবর হয়। যা আজও ফ্যাক্সগেট কেলেঙ্কারি নাম পরিচিত।
সেইসময় লন্ডনে ছিলেন সাজ্জাদ গোনি লোন। জম্মু-কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের নেতা, যিনি নরেন্দ্র মোদীর নয়নের মণি, তিনি নাকি রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানান। টুইট করে রাজ্যপালের আপ্তসহায়ককে বার্তা পাঠানোর কথা জানান। বলেন, বিজেপি এবং আরও ১৮ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে। সেইসময় কাশ্মীর বিধানসভায় ৮৭টি আসন। সরকার গঠনের জন্য এই সংখ্যা ধারেকাছেও ছিল না।
আরও পড়ুন মোদী জমানায় ‘অতি সক্রিয়’ CBI! ৯৫ শতাংশ বিরোধী নেতা স্ক্যানারে
কিন্তু কোনও পক্ষকেই সমর্থন না করে বিধানসভাই ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মালিক। জানান, এনসি-পিডিপি এবং কংগ্রেস কোনওভাবেই স্থায়ী সরকার গড়তে পারত না। দেদার ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কা ছিল তাঁর। গত সপ্তাহে দ্য প্রিন্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মালিক বলেছেন, সেইসময় তিনি সাজ্জাদ লোনের সঙ্গে কথা বলেন। মালিক বলেছেন, "আমি লোনের কাছে জানতে চাই কে তাঁকে সমর্থন করছে, তাতে তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে ৬ জন বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু শপথ গ্রহণের অনুমতি দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার দাবি করেন।"
মালিকের এই দাবির পাল্টা দিয়েছেন লোন। টুইটে বলেছেন, "যখনই আমি লন্ডনে থাকি বা যাই, এই লোকটা কুৎসিত কথাবার্তা বলেন। ওই সময়টা আমি লন্ডনে ছিলাম, কেউ কি তাঁকে জানাবে। আমাকে ফিরে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হবে, দেখা করতে হবে। বর্তমানে বিদেশে আছি পারিবারিক কাজকর্ম নিয়ে।"
আরও পড়ুন ‘মোদী এসবের পিছনে রয়েছেন মনে করি না’, ED-CBI নিয়ে মমতার নিশানায় শাহ-শুভেন্দু
তবে একথা সত্যি যে ২০১৪ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করেন সাজ্জাদ লোন। মোদীকে নিজের বড় ভাই বলতেন তিনি। বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন, গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত। কিন্তু লোনের বিরোধীরা বলছেন, মালিকের কথাতে এটাই প্রমাণ হয় সেই সময় পিডিপি-এনসি-কংগ্রেস সরকার গঠন ঠেকাতেই বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার লোনকে দিয়ে সরকার গঠন করতে চেয়েছিল।