কর্ণাটক সরকার আগের বিজেপি সরকারের আনা ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে মন্ত্রীসভায় মেলে চূড়ান্ত অনুমোদন। রাজ্যের আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এইচ কে পাটিল এই কথা জানিয়েছেন।
কর্ণাটক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিজেপি সরকারের আনা ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) কর্ণাটকের সিদ্দারামাইয়া সরকার বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্ণাটক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিজেপি শাসনকালে আনা ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে পাঠ্যবই থেকে বাদ হেডগেওয়ার ও সাভারকারের জীবনী। কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী মধু বাঙ্গারপ্পা বলেছেন যে "কর্ণাটক মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে আরএসএস প্রতিষ্ঠাতা কেবি হেডগেওয়ার এবং সাভারকারের জীবনী সম্পর্কিত অধ্যায়গুলি সরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর বিজেপি সিলেবাসের বদল এনে এই বিষয়গুলি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে। আমরা সেগুলি পরিবর্তন করেছি। বদলে সাবিত্রীবাই ফুলে, ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা নেহরুর চিঠি এবং বি আর আম্বেদকরের কবিতা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে"।
কর্ণাটকে ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল
আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এইচ কে পাটিল বলেছেন যে 'কর্ণাটক মন্ত্রিসভা আগের বিজেপি সরকারের আনা ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা যে বিল আনতে চলেছি তা সংবিধান মেনেই আনা হবে। সেই সঙ্গে স্কুল-কলেজে প্রার্থনার সঙ্গে সংবিধানের প্রস্তাবনা পড়া বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। তিনি জানান যে কর্ণাটক মন্ত্রিসভা পুরানো আইন ফিরিয়ে আনতে রাজ্যে এপিএমসি আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন নিয়েও আলোচনা হয়েছে'।
ধর্মান্তর বিরোধী আইন বাতিল নিয়ে সিদ্দারামাইয়া সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কর্ণাটকের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা বিসি নাগেশ বলেছেন, 'কংগ্রেস মুসলমানদের ভোট চায়, সিদ্দারামাইয়া সরকার হিন্দুদের বিরুদ্ধে। তারা হিজাব পুনরায় চালু করতে চান। সংখ্যালঘুদের ভোট পাওয়ার জন্য কংগ্রেস সবকিছু নিয়েই রাজনীতি করতে চাইছে"।
২০২২ সালে, কর্ণাটকের তৎকালীন বিজেপি সরকার ধর্মান্তর বিরোধী আইন ২০২২ কার্যকর করেছিল। এই আইনে বলা হয়েছে, জোর করে, প্রলোভন দেখিয়ে বা কারুর প্রভাবে এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত করা সম্পুর্ণ অবৈধ। এ ধরনের মামলায় ৩ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। ধর্ম পরিবর্তনকারী ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের বিধান রয়েছে। অন্যদিকে সম্মিলিতভাবে করলে ৩ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনে।
কর্ণাটক ছাড়াও ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং হরিয়ানায় ধর্মান্তর আইন প্রযোজ্য। দেশের ১০টি রাজ্যে ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে কঠোর আইন কার্যকর রয়েছে। বেশিরভাগ রাজ্যে এই আইনগুলি আনা হয়েছিল বিজেপি সরকারের আমলে।