বাংলার রাজনীতিতে কুকথা বা কুবাক্য ছিল না এমন নয়। মন্ত্রী, সাংসদ বা নেতাদের এটা একটা বড় অস্ত্র। তবে বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল এ ব্যাপারে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সারা বাংলায় জেলা রাজনীতিতে অন্যদের থেকে প্রচারে নিজেকে একটু এগিয়ে রাখতে ভালবাসেন এই নেতা। সামনে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন। কুকথার মাত্রা বাড়বে বৈ কোনও সন্দেহ নেই।
এরই মধ্যে খয়রাশোলের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষকে দুষ্কৃতীরা গুলি ও ভোজালি দিয়ে এলোপাথারি কোপ দেয়। ঘটনার পরের দিন দুর্গাপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল ওই খুনের ঘটনার পিছনে বিজেপিকে দায়ী করেছেন। বিজেপি শুধু তা অস্বীকার করে না দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, অনুব্রত মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই খুনীদের ধরা যাবে। এই কথাতেই ঘৃতাহুতি পড়ে। অনুব্রত মন্ডল বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে রাখাল-বাগাল বলে সম্বোধিত করেন। যদিও এর আগে পুলিশকে বোমা মারা থেকে গুড়-বাতাসা, ঢাকের চড়াম চড়াম বোল, নানা কথা বলে রাজনৈতিক ময়দানে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়েছেন। তবে অনুব্রত এর আগে “আক্ষেপ’’ করেছেন তাঁর পুরো বয়ান বলা হয় না। এদিকে বিজেপি মনে করছে এসব লোকজন শাসকদলে রয়েছেন বলেই বাঙালীর দুর্ভোগ বাড়ছে।
আরও পড়ুন, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সম্পর্কে কু কথা অনুব্রত মণ্ডলের
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আলটপকা মন্তব্য করেন না এমন কিন্তু নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অত্যন্ত ঝানু রাজনীতিবিদের মত। এমনকী অনুব্রতর নাম পর্যন্ত মুখে আনেননি। দিলীপ ঘোষ বলেন, “এই ধরনের লোকেরা আজ রাজনীতিটাকে কলুষিত করে দিয়েছে। খুন-খারাপের রাজনীতি চলছে পশ্চিমবাংলায়। এই নেতাদের জন্য আমাদের মাথা নীচু হয়ে যাচ্ছে। এরা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ। এরাই দল চালাচ্ছে, এরাই সরকার চালাচ্ছে। বাঙালীর কপালে দুর্ভোগ আছে।’’
- ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকজন নেতার মুখে লাগাম থাকবে না একথা অনায়াসেই বলা যায়। ডান-বাম, শাসক-বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতারা রয়েছেন এই তালিকায়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, মন্তব্যের ব্যাপারে সংযমী হওয়া উচিত সকলের।