ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় আদালতের রায়ে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে। আর রক্ষাকবচ মিলতেই ৫১ পীঠের অন্যতম তারাপীঠে বিশাল যজ্ঞে বসলেন বীরভূমের 'কেষ্ট'। ৩৩১ কেজি বেল কাঠ ও ৬০ কেজি ঘি সহযোগে হল মহাযজ্ঞ। ভোগ নিবেদন, দরিদ্র-নারায়ণ সেবা। ঢোল, করতাল, খোলের বাদ্যিতে সারা দিন গমগম করল মন্দির চত্বর। কিন্তু কেন এই যজ্ঞ? তা নিয়ে মুখে কুলুপ তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির।
এই ধরণের যজ্ঞ প্রায় সব বড় ভোটের আগেই করে থাকেন লালা মাটির দেশের কেষ্ট মণ্ডল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কঙ্কালীতলায় যজ্ঞ করেন তিনি। জানিয়েছিলেন মা তাঁকে জানিয়েছেন যে ৪২-এ ৪২ হয়ে যাবে। ২১ সালের বিদানসভা ভোটের আগেও যজ্ঞে বসেছিলেন তৃণমূলের এই ডাকসাইটে নেতা। দাবি করেন মায়ের কাছে তিনি একটি জিনিস চেয়েছেন, যার জবাবে মা বলেছেন হয়ে যাবে। এবার কী তাহলে পুরভোটে তৃণমূলের সাফল্য? নাকি ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলা নিয়ে মায়ের কাছে আহুতি দান?
এ দিন মন্দির চত্বরে তৈরি অস্থায়ী হোমকুণ্ডে যজ্ঞে আহুতি দেন অনুব্রত মণ্ডল। যজ্ঞের কারণ নিয়ে কিছু না বললেও অবশ্য আসন্ন ১০৮ পুরভোটের ফলাফল ও ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তিনি। অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, 'সবকটা পুরসভাতেই তৃণমূলের জয়জয়কার হবে।' মামলা প্রসঙ্গে বলেন, 'আদালতকে আমি স্যালুট করব। সম্মান জানাব। আদালত যা রায় দেবে তা মাথা পেতে নেব। আদালত যেভাবে বলবে সেভাবে আমি সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেব। আইন আইনের পথে চলবে।'
ভোট পরবর্তী হিংসায় ইলামবাজারে বিজেপি কর্মী গৌরব সরকার খুনে সিবিআই নজরে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই মামলায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি তাঁকে দুর্গাপুরে সিবিআই অফিসে হাজিরার নোটিস ধরানো হয়। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি হাজির হননি। পরে ফের তাঁকে ১লা ফেব্রুয়ারি হাজিরা দিতে বলা হয়। এবারও অসুস্থয়ার কারণ দেখিয়ে হাজির হননি শাসক দলের এই দোর্দদণ্ডপ্রতাপ নেতা। পাল্টা তিনি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলাতেই আদালতের রক্ষাকবচ পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁকে গ্রেফতার পারবে না সিবিআই। তবে সিবিআই সূত্রে খবর, ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূল জেলা সভাপতিকে নোটিস দেওয়া হতে পারে।
বুধবার এসএসকেএমে গিয়েছিলেন অনুব্রত। আজ তাঁর শারীরিক অবস্থা কেমন? সাংবাদিকদের সামনে অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'ঠাণ্ডা লেগে আছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকরা বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। বেশি কথা বলতে পারব না।'