তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার দিনই বিজেপিতে যোগ দিলেন বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা। মুকুল রায়ের হাত ধরে মঙ্গলবার দিল্লিতে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত অধ্যাপক-সাংসদ অনুপম। অনুপমের বিজেপিতে যোগদান ‘প্রত্যাশিত’ই ছিল বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। তবে মুকুল রায়ের পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী গেরুয়া শিবিরে একদা তৃণমূলীদের এমন যোগদান নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
দল বিরোধী কাজ এবং ফেসবুকে নানা ধরনের পোস্ট করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে অনুপম হাজরাকে ৯ জানুয়ারি দল থেকে বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল। ওই একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বিজেপিতে যোগ দেওয়া তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খানের বিরুদ্ধেও।
অনুপম হাজরা যে বিজেপি-তে যোগ দিতে চলেছেন সে কথা দিন কয়েক আগে প্রায় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তৃণমূলের একদা 'দু'নম্বর' মুকুল অনুপমের নাম করেই বলেছিলেন, নির্বাচন ঘোষণা হতেই দলবদল শুরু হবে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি-তে যোগ দিলেই, সংশ্লিষ্ট নেতা-ক্রমীর বিরুদ্ধে মামলা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে গেলে 'মামলা দিয়ে ফাঁসানো' সম্ভব হবে না, আর তখনই পদ্ম শিবিরে যোগদানের ঢল নামবে। তবে মুকুল এমন দাবি করলেও, তাঁর যোগদানের প্রসঙ্গকে নেহাত 'গুজব' বলে উল্লেখ করেছিলেন অনুপম হাজরা।
২০১৪ সালে বীরভূম জেলার বোলপুর লোকসভা আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন ‘কেষ্ট কাকুর স্নেহের ভাইপো’ অনুমপ। বর্তমানে তিনি সাংসদ। অথচ ভোটে জেতার পর বিভিন্ন ইস্যুতে ‘কেষ্ট কাকু’ অর্থাৎ তৃণমূলের অন্যতম ‘বাহুবলী নেতা’ তথা বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডেলর সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বেড়েছে বছর সাইত্রিশের অনুপম হাজরার। বেশ কয়েকবার সোশাল মিডিয়ায় মুখ খুলেও তৃণমূল নেতৃত্বের ‘বকুনি’ খেতে হয়েছে তাঁকে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে অনুমপকে তৃণমূল আর প্রার্থী করবে না বলেই মনে করছিল, দলেরই একটা বড় অংশ। তবে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে অনুমপ-সহ তৃণমূলের মোট নয় সাংসদের টিকিট যে অনিশ্চিত সে কথা আগেই বলেছিল দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। পড়ুন, সেই প্রতিবেদন- ২০১৯-এর লোকসভায় টিকিট অনিশ্চিত তৃণমূলের ৯ বর্তমান সাংসদের!