নজির বিহীন। রাজ্যসভায় ভাষণের মাঝেই নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করলেন তৃণমূল সাংসদ দিনেশ ত্রিবেদী। শুধু ইস্তফাই নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদীরও প্রশ্ংসা করেছেন তিনি। বর্ষীয়ান সাংসদের আচমকা পদত্যাগে শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তাঁর পদ্ম পতাকা হাতে তোলা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন অনেকেই। কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে দিলীপ ঘোষ, গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই দীনেশ ত্রিবেদীকে দলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই আবহেই এককদম বেড়ে লোকসভায় ভোটের প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে 'দাদা' বলে সম্বোধন করেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। দীনেশকে গৈরিক আহ্বান জানিয়ে অর্জুন বলেছেন, 'দাদা চলে আসুন বিজেপিতে'।
মাত্র বছর ডেরেক আগের কথা। ব্যারাকপু লোকসভা আসেন প্রেসটিজ ফাইটে একে অপরের প্রতিপক্ষ ছিলেন ববতৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদী ও বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিং। সম্মানের লড়াইয়ে পোড় খাওয়া দীনেশ হারিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন অর্জুন। এরপর গত বছর এপ্রিলে পরাজিত সৈনিক দীনেশকে রাজ্যসভায় পাঠান তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু দলে কর্পোরেট সংস্কৃতি-র বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েই শেষ পর্যন্ত সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা করেছেন দীনেশ ত্রিবেদী।
আরও পড়ুন- ‘দলে দম বন্ধ হয়ে আসছে’, রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দীনেশের
আরও পড়ুন- “এত ঘন ঘন দমবন্ধ হয়ে আসলে তো খুব চিন্তার ব্যাপার!”, দীনেশকে কটাক্ষ তাঁরই সতীর্থর
বিজেপিতে দীনেশ যোগের ইঙ্গিত উজ্জবল হতেই তাঁকে 'দাদা' বলে সম্বোধন করেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। বলেন, "দিনেশ ত্রিবেদী আমার দাদার মত, বিজেপিতে এলে খুশি হব। আমি একটা সময় বলেছিলাম, দীনেশজি কাজ করেননি। আসলে ওঁকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আসল লড়াইটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছিল। দীনেশদাকে সামনে রেখে লড়ছিল অন্যরা। আজ দীনেশদা বুঝতে পেরেছেন নিজের ভুল। ওঁর সঙ্গে কথা বলব। এখনই কথা বলব। ওয়েলকাম বলব। চলে আসুন বিজেপিতে।"
সাংসদ পদ ছাড়তেই কী বদলে গেল সম্পর্কের সমীকরণ? জবাবে অর্জুন সিং বলেছেন, 'ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার লড়াই নয়। লড়াই ছিল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। নীতি-আদর্শের লড়াই হওয়া উচিত।' বাংলায় ব্যক্তি রাজনীতির আমদানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছে বলেও কটাক্ষ করেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ।
বঙ্গ রাজনীতিতে জোড়া-ফুল ছেড় পদ্মে নাম লেখানোর হিড়িক জারি রয়েছে। সেই তালিকায় এবার দীনেশবাবু। অতীতে দল বদলে চরম দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ব্য়ক্তিত্বকে গলায় গলায় দেখা গিয়েছে। দীনেশ-অর্জুনের ক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনাই ক্রমশ প্রকট হচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন