'জয় শ্রীরাম'। এই ধ্বনীতেই আপাততত উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ, বন্দে মাতরম্ স্লোগান শুনতে অভ্যস্ত বাংলা এই মুহূর্তে 'রামে'র নামে তোলপাড়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একাধিকবার 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনী শুনে খোলা রাস্তায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বিস্তর জলঘোলা। আর ঠিক এই পরিস্থিতে প্রাক্তন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ১০ লক্ষ 'জয় শ্রীরাম' লেখা পোস্টকার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কে ভিন্ন যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যরাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের সদ্য নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ তথা তৃণমূলের প্রাক্তন 'বাহুবলী' নেতা অর্জুন সিং। অর্জুনকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, "আমরা ঠিক করেছি, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় জয় শ্রীরাম লেখা ১০ লক্ষ পোস্ট কার্ড পাঠাব"।
আরও পড়ুন তৃণমূল নেতাদের দলে নেওয়ার প্রশ্নে ধীরে চলো নীতি বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
গেরুয়া বাহিনীর পরিচিত স্লোগান 'জয় শ্রীরাম' নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে চাঞ্চল্য শুরু হয় নির্বাচন পর্ব চলাকালীন। মে মাসের প্রথম দিকে পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি রাজনৈতিক সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সে সময় তাঁর যাত্রাপথে একদল গেরুয়া ঝান্ডাধারী 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনী তোলেন। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে প্রকাশ্যে মেজাজ হারান মমতা। গত বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া এলাকাতেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। কনভয়ের সামনে রাম ধ্বনী শুনে রাস্তায় নেমে আসেন ক্ষুব্ধ মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, 'বহিরাগত' গেরুয়া কর্মীরা তাঁর গাড়ির উপর 'হামলা' করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে 'হামলা'র ঘটনায় ইতিমধ্যে ১০ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে বিজেপির দাবি। তবে পুলিশ এই গ্রফতারির কথা স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুন জয় শ্রীরাম স্লোগান নিষিদ্ধ করুক রাজ্য, দাবি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ হবলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খারাপ ভাষায় কথা বলছেন। এই ধ্বনী শুনলেই তিনি গালিগালাজ করছেন। আমরা কখনও দেখিনি, জয় শ্রীরাম ধ্বনী দেওয়ায় কেউ কখনও গ্রেফতার হয়েছেন। এসব দেখে শুনে মনে হচ্ছে, উনি চরম হতাশায় ভুগছেন। ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এর আগে আরও ৩ জনকে একই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। আশা করব, তাঁরা ছাড়া পাবেন। আজ বাংলায় জয় শ্রীরাম ধ্বনী তোলা বিরাট অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে"।
দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপি নেতৃত্ব ধ্বনী প্রসঙ্গে যাই বলুক তৃণমূলের দাবি, মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুর নেতৃত্বে ভাটপাড়া-ব্যারাকপুর চত্বরে সম্প্রীতি নষ্ট করে হিংসায় মদত দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সবাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "এই ঘটনা নজিরবিহীন। বাংলায় এমন সংস্কৃতি আমরা কখনও দেখিনি। এটা আসলে বিজেপির সংস্কৃতি"।
Read the full story in English