মুখ্যমন্ত্রী তাঁর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এখন এই বিষয়ে শুনানি চলছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজত থেকে অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদনের উপর দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে। হাইকোর্টের শুনানির আগে, দিল্লির মন্ত্রী আতিশি বলেছিলেন, 'কেজরিওয়াল একজন সুগারের রোগী এবং গ্রেফতারের পর থেকে তার ওজন সাড়ে চার কেজি কমে গিয়েছে।
মঙ্গলবার দাখিল করা পিটিশনে ইডি বলেছে, 'মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল হলেন আফগারি দুর্নীতির "কিংপিন" এবং "কেলেঙ্কারির" "মূল ষড়যন্ত্রকারী"। এদিকে, আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং যাকে এই একই মামলায় ৬ মাস আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদনে বুধবার দিল্লি হাইকোর্টকে বলেছেন, বাতিল হয়ে যাওয়া দিল্লির মদ নীতির সঙ্গে আর্থিক দুর্নীতির যুক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভোটের ঠিক আগে তাঁকে গেফতারির একটাই লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচনের আগে "তাঁর দলে ভাঙন ধরানো"।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক মনু সিংভি, কেজরিওয়ালের পক্ষে উপস্থিত হয়ে বিচারপতি স্বরানা কান্ত শর্মার বেঞ্চকে বলেন, 'আপ প্রধানের গ্রেফতারির সময় নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পর কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ইডি। পাশাপাশি ইডির বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ এনে তিনি বেঞ্চকে বলেন, "ধারা ৫০ এর অধীনে কেজরিওয়ালের বিবৃতি রেকর্ড করার জন্য ED কোনরকমের চেষ্টা করেনি"। আপ সুপ্রিমোকে গ্রেফতারের প্রয়োজনীয়তা, যৌক্তিকতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে ভোটের আগে গ্রেফতারের উদ্দেশ্য নিয়েও আদালতে প্রশ্ন তোলা হয়।
কেজরিওয়াল, ২১ শে মার্চ ইডির হাতে দিল্লির আফগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং বর্তমানে তিনি তিহার জেলে বন্দী রয়েছেন। তার এই গ্রেফতারি বেআইনি বলে দাবি করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ইডি দাবি করেছে যে কেজরিওয়াল ২০২১-২০২২ সালের আবগারি নীতি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং সাউথ ব্লককে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই নীতির খসড়া তৈরি করতে দিল্লি সরকারের মন্ত্রী, AAP নেতা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশ করেছিলেন।
কেজরিওয়ালের পক্ষে তার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, 'কোন প্রমাণ ছাড়াই কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে'। সিংভি বলেন, 'লোকসভা নির্বাচনে কেজরিওয়ালকে তার দলের প্রার্থীদের প্রচারে বাধা দিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে'। ইডির দায়ের করা জবাবে বলা হয়েছে যে 'মদ কেলেঙ্কারি থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে আম আদমি পার্টি (আপ) সর্বাধিক সুবিধা পেয়েছে। এই অর্থ ২০২২ সালের গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারে নগদ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছে'।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেজরিওয়ালের সঙ্গে কথা বলেছেন স্ত্রী
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল তার স্ত্রী এবং পরিবারের একজন সদস্যের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আধ ঘণ্টা কথা বলেন। পরিবারের সদস্যরা তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। বাড়ি ছাড়াও দিল্লির পরিস্থিতি কথাও জিজ্ঞাসা করেন কেজরিওয়াল।
জেল সূত্র বলছে, কেজরিওয়ালকে সপ্তাহে দুবার ভিডিও কল করার এবং প্রতিদিন পাঁচ মিনিট ফোনে কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেজরিওয়ালের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে এবং তার সুগার ওঠানামা করছে।