Advertisment

সিপিএমের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ, তিরুঅনন্তপুরমের মেয়র পদে ২১ বছরের তরুণী

দেশের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র পেতে চলছে তিরুঅনন্তপুরম।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব না ছাড়ার জন্য যখন প্রায়ই সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় বাম দলগুলোকে, ঠিক তখনই সাহসী সিদ্ধান্ত নিল কেরালার সিপিআইএম। দেশের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র পেতে চলছে তিরুঅনন্তপুরম। ২১ বছরের এক তরুণীকে মেয়র পদের জন্য বেছে নিয়েছে কেরালা সিপিআইএমের সম্পাদকমণ্ডলী।

Advertisment

অল সেন্ট'স কলেজের অঙ্কে অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আর্যা রাজেন্দ্রনই কেরালার রাজধানী শহর তিরুঅন্তপুরমের পরবর্তী মেয়র। আর্যার গোটা পরিবারই বামপন্থী। সবাই সিপিএমের সদস্য। তাই ছোট থেকেই রাজনীতির আবহেই তাঁর বেড়ে ওঠা। পঞ্চম শ্রেণইতে পড়তে পড়তেই পার্টির কাজ শুরু। পরবর্তীকালে এসএফআই সংগঠনের হয়ে কাজ এবং তারও পরে রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আর্যা।

কেরলের মুদাভানমুগল ওয়ার্ড থেকে তিরুঅনন্তপুরম পুরসভার লড়াইয়ে সিপিএমের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন আর্যা৷ কাউন্সিলর হিসাবে প্রথমে নির্বাচিত হন তিনি৷ দক্ষিণের বামপন্থী এই কন্যা স্থানীয় নির্বাচনে সিপিএমের কনিষ্ঠতম প্রার্থী ছিলেন। বিপক্ষের ইউডিএফ প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি৷ পেরুরকাদা ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্বকারী দলের প্রবীণ প্রার্থী জামিলা শ্রীধরন ও গায়ত্রী বাবুর মধ্যে যে কোনও একজনকে প্রথমে মেয়র করার কথা বিবেচনা করা হয়েছিল।

তবে, দক্ষিণী এই রাজ্যের গ্রাম ও শহরে স্থানীয় স্তরের নির্বাচনগুলিতে তারুণ্যের আধিক্য দেখা গিয়েছে। জয়জয়কার শাসক জোট এলডিএফের নতুন মুখের। ৷ তাই বামশাসিত কেরল চাইছে পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি রাখতে৷ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নির্বাচনে এলডিএফ ছ'টির মধ্যে পাঁচটিতেই জেতে বামেরা৷ জেলা পঞ্চায়েতেও ভাল ফল করেছে৷ ফলে জামিলার বা গায়ত্রীর পরিবর্তে নতুন কোনও মুখকে মেয়র করার জন্য সম্মিলিতভাবে দাবি ওঠে৷ এরপর সিপিএম রাজ্য কমিটিই মেয়র পদে আর্যার নাম প্রস্তাব করে৷

মেয়র পদে শনিবারই তাঁর নাম ঘোষণা হতে পারে। তার আগে দলের সিদ্ধান্তে খুশি আর্যা। তাঁর কথায়, 'বামপন্থী আদর্শ মেনেই পুরপ্রশাসনের কাজ এগোবে। দলে এই কাজের যাঁদের অভিজ্ঞাতা রয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই কাজ করব।'

তবে গুরুদায়িত্বভার তাঁর হাতে এলেও পড়াশুনো চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন আর্যা রাজেন্দ্রন। রোজ ক্লাসে যেতে না পারলেও তাঁর কলেজ ও শিক্ষকরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন বলেই মত মেধাবী ছাত্রীটির। তাই কোনও মধ্যপন্থা অবলম্বন করে পড়াশুনো ও রাজনীতির অন্তর ঘোচাতে চান আর্যা।

রাজনবীতির নবপ্রজন্মের কাছে আপাতত রোল মডেল তিরিঅনন্তপুরমের ভাবী মেয়র। আর্যার বাবা ইলেকট্রিশিয়ান ও মা এলআইসি এজেন্ট। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার হলেও কখনই মেয়েকে তাঁরা দলের কাজে বাধা দেননি। আর্যার কথায়, 'গত কয়েক বছরে কেরালার শহর থেকে গ্রামে- সর্বত্র আমাকে ঘুরতে হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের বাইরে ষষ্ঠ শ্রেণইতে পড়াকালীন একবার মাত্র মুম্বই গিয়েছিলাম। তাও সেটা মায়ের অফিস থেকে নিয়ে গিয়েছিল।' পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আর্যার বড় দাদা এখন মধ্য প্রাচ্যে কর্মরত। পেশায় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়র সে।

কোভিড সামলে আপাতত দেশ ও তার বাইরেও মডেল কেরালা। নেপথ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজী। আর্যার রোড মডেলও এই শৈলজাই। বাম আদর্শে দিক্ষিত হলেও আধ্যাত্মিকতার ইতিবাচক শক্তিতে বিশ্বাসী সে। মায়ের সঙ্গে মন্দিরেও যান। ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বলেই মনে করেন আর্যা। তবে ধর্মের গোঁড়ো কুসংস্কারের তীব্র বিরোধী সে।

তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বে এগিয়ে আনা হচ্ছে। খুশি সিপিএমের প্রবীণ নেতৃত্ব। দলের নেতা তথা মন্ত্রী কে সিরেন্দ্রনের কথায়, 'নয়া প্রজন্মের দুরদৃষ্টি, কাজের ইচ্ছাই দেশকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে। আমি আর্যাকে ছোট থেকে চিনি। ওর লড়াই দেখছি। ওর বয়েসের আশেপাশে বহু আআএস অফিসার কাজ কতরছে। ফলে আমি নিশ্চিত ও ভালো করেই কাজ করবে।'

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

CPIM kerala Cpm
Advertisment