Lok Sabha Election 2024: লোকসভা ভোটে ভারতব্যাপী প্রার্থী দিচ্ছে ওয়াইসির AIMIM! চ্যালেঞ্জ ইন্ডিয়া জোটের

Asaduddin Owaisi-led AIMIM In Lok Sabha poll 2024: আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে হিন্দিভূমি সহ দেশের একাধিক রাজ্যের বহু আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্ভবত, ভোটে এআইএমআইএম সংখ্যালঘু ভোটারদের আকর্ষণ করতে পারে, ফলে বাইনারি পলিটিক্সের সম্ভবনা বাড়ছে, ভোট কাটতে পারে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো? এই আশঙ্কাই এখন জোরদার হচ্ছে।

সূত্রের খবর, এআইএমআইএম উত্তরপ্রদেশে ২০টি আসন এবং বিহারের প্রায় ৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছে। ২০২৯ সালের নির্বাচনে, দলটি বিহার থেকে শুধুমাত্র একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

এআইএমআইএম মহারাষ্ট্রেও মাঠে নামবে - যেখানে এটি মুম্বাই এবং মারাঠওয়াড়াতে প্রবেশ করতে পারে। পাশাপাশি হোমগ্রাউন্ড তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদ ছাড়াও সেকেন্দ্রাবাদ থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম প্রার্থী। দলটি অবশ্য তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নাও করতে পারে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় প্রার্থী দিলেও পরাজিত হয়েছিল এআইএমআইএম।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ওয়াইসি বলেছেন, "আমরা হায়দ্রাবাদ (তেলেঙ্গানা), ঔরঙ্গাবাদ (মহারাষ্ট্র) এবং কিশানগঞ্জে (বিহার) নিশ্চিত লড়াই করব। আমাদের বিহার ইউনিট আরও বেশি আসনে লড়তে চায়। উত্তরপ্রদেশেও একই ধরণের দাবি রয়েছে। মহারাষ্ট্রে মুম্বাই ও মারাঠাওয়াড়া থেকে লড়াইয়ের ডাক আছে। আমরা শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেব যে আমরা কতটি আসনে লড়াই করতে চলেছি।"

আরও পড়ুন- Lok Sabha Election 2024: পদ্মে চরম কোন্দল, টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ বার্লার প্রকাশ্যে বিজেপি প্রার্থী টিগ্গাকে কড়া হুঁশিয়ারি

বর্তমানে লোকসভায় এআইএমআইএম-এর দুটি আসন রয়েছে। ওয়াইসি (হায়দরাবাদ) নিজে এবং ইমতিয়াজ জলিল (ঔরঙ্গাবাদ) এআইএমআইএমের দুই সাংসদ৷ ২০১৯ সালে, কিশানগঞ্জের এআইএমআইএম প্রার্থী আখতার-উল-ইমান প্রায় ৩ লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন, কংগ্রেস এবং জেডি(ইউ) প্রার্থীদের পরেই তৃতীয় স্থানে ছিলেন। বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে কিশানগঞ্জ ছিল একমাত্র আসন যেখানে ২০১৯ সালে কংগ্রেস-আরজেডি জোট জিতেছিল। এআইএমআইএম আবার আখতার-উল-ইমানকে আসন থেকে প্রার্থী করবে।

এআইএমআইএম-এর পরিকল্পনা বিরোধী দলগুলির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ লোকসভা নির্বাচনের আসাউদ্দিনের দলের লক্ষ্য উত্তর ভারতের সংখ্যালঘু ভোট একত্রিত করে ভোটবাক্সে ধাক্কা দেওয়া।

এআইএমআইএম ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে কোনও প্রার্থী দেয়নি, তবে ২০১৭ সালে রাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনে ৩২ টি আসন পেয়ে ভাল ফল করেছিল। উল্লেখ্য দলটি ২০২২ সালের উত্তরপ্রেদশে বিধানসভা নির্বাচনে কোনও আসনে জয়ী হয়নি, তবে ১০টিরও বেশি আসনে যে ভোট পেয়েছে তা সেখানে সমাজদবাদী পার্থীদের পরাজয়ের ব্যবধানের চেয়ে বেশি ছিল।

মুম্বাই এবং মারাঠওয়াড়ায় মুসলিম ভোটের হার প্রায় ১২ শতাংশ। এআইএমআইএম সেখানে প্রার্থী দিলে 'ইন্ডিয়া' জোটের কাছে তা বড় উদ্বেগের বিষয় হবে।

বিহারের সীমাঞ্চল অঞ্চলে এআইএমআইএম ভালো করেছে, এখানে উল্লেখযোগ্যভাবে মুসলিম জনসংখ্যাবেশি। গত রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে, দলটি পাঁচটি আসন জিতেছিল, যদিও তারমদ্যে চারজন বিধায়ক পরে আরজেডিতে চলে যায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ওয়াইসি বলেছেন,'বিহারে আরজেডি ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে আছে। আরজেডি আমাদের চারজন বিধায়ককে ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই ওদের সঙ্গে জোট করার প্রশ্নই আসে না। কেন এআইএমআইএম ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে নেই তার উত্তর কেবল ওই জোটের নেতারাই দিতে পারে। তাঁরা ইতিমধ্যে একটি অভিজাত ক্লাব গঠন করেছে। এর সদস্যপদ উচ্চবিত্তদের জন্য সংরক্ষিত। ওরা শুরু থেকেই আমাদের গালিগালাজ করে আসছে।'

আরও পড়ুন- PM Modi Kashmir Visit: ‘কাশ্মীর আজ স্বাধীনভাবে শ্বাস নিচ্ছে’, ৩৭০ ধারা নিয়ে কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা আক্রমণ মোদীর

এআইএমআইএম-এর বিহারের মুখপাত্র আদিল হাসান জানান যে কিশানগঞ্জ ছাড়াও, দলটি কাটিহার, পূর্ণিয়া, আরারিয়া, দরভাঙ্গা, মধুবনী এবং গয়াতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় এবং জোটের জন্য বিএসপির সাথে আলোচনা করছে। তাঁর কথায়, "তালিকাটি ব্যারিস্টার সাহাবের (ওয়াইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনিই চূডা়ন্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা বিএসপির সঙ্গে জোট করতে চাই। আমরা সমমনস্ক দল এবং ২০২০ সালে একসঙ্গে লড়াই করেছি।"

উত্তরপ্রদেশের এআইএমআইএম মুখপাত্র শওকত আলী বলেছেন, 'আমরা ইউপিতে ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তাব দিয়েছি এবং ওয়াইসি সাহেবের কাছে পাঠিয়েছি। আমরা যে আসনগুলিতে আগ্রহী সেগুলির মধ্যে রয়েছে সম্বল, মোরাদাবাদ, আমরোহা, বিজনোর, সাহারানপুর, কানপুর এবং জৌনপুর। দলের তরফে এসপি, বিএসপি সহ সব বিরোধী দলকেই সেকথা জানিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনও জবাব মেলেনি।'

আলী বলেছিলেন যে, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি মুসলিম নেতৃত্বকে "অস্পৃশ্য" বলে বিবেচনা করে। বলেছেন, "তাঁরা আমাদের ভোট চায়, কিন্তু আমাদের নেতৃত্ব চায় না। আজ, এসপি এবং কংগ্রেস উভয়েই মুসলিম ভোটের জন্য লড়াই করছে। তাঁরা ভয় পায় যে যদি জোট হয়, আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠব এবং তাঁরা তাদের ভোটের ভিত্তি হারাবে।"

তেলঙ্গানায় এআইএমআইএম সূত্র জানিয়েছে, দলটি সম্ভবত বিআরএসের সঙ্গে বোঝাপড়া বজায় রাখতে পারে, তবে সেকেন্দ্রাবাদ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য কর্মীদের মধ্যে থেকে চাপের মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের সাংসদ রাজ্য বিজেপির প্রধান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি।