আসানসোলে খুশির মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা-মায়ের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে আকস্মিক ছন্দপতন ঘটল। অনশন চলাকালীন হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়েন খুশির বাবা অক্ষয় কুমার ঘোষ। শুক্রবার দুপুরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। এই ঘটনার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন খুশির পরিজনরা। আসানসোলের এইচএলজি হাসপাতালের সামনে তাঁরা রাস্তা অবরোধ করেন। পরিস্থিতির সামাল দিতে অবশেষে পুলিশ আসে। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ কমিশনারও। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে তাঁদের আশ্বাস দেন তিনি। এই আশ্বাসে শেষপর্যন্ত রাস্তা অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। এখন আসানসোলের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে খুশির বাবা অক্ষয়কে।
আরও পড়ুন, EXCLUSIVE: ফের চিকিৎসায় গাফিলতি! অকালমৃত্যু খুশির, আসানসোলে টানা ধরনায় বাবা-মা
তবে খুশির বাবার শারীরিক অসুস্থতার জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি বাতিল করা হয়নি বলে আই ই বাংলাকে ফোনে জানিয়েছেন অক্ষয়ের জামাইবাবু অরুণ পাতর। তবে আপাতত অনশন কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার খুশির মা রূপা ঘোষেরও চিকিৎসা করা হয়েছে বলে শনিবার জানান অরুণ পাতর। চিকিৎসায় গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবিতে প্রায় ১ মাস ধরে ধরনা করে আসছেন অক্ষয়রা। তাতেও প্রশাষনের তরফ থেকে কোন সাড়া না মেলার পর গত বুধবার থেকে আমরণ অনশনে বসেন খুশির বাবা-মা। ধরনা কর্মসূচির মধ্যেই গত ১৩ এপ্রিল একদিনের অনশনেও বসেছিলেন অক্ষয়রা। গত সোমবার আসোনসোলে মৌন মিছিলের আযোজনও করেন তাঁরা। যে মিছিলে খুশির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হেঁটেছেন প্রায় হাজারখানেক সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন, EXCLUSIVE: হাসপাতালের গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ, আমরণ অনশনে বাবা-মা
গত ২০ মার্চ আচমকা জ্বর হওয়ায় ৬ মাসের মেয়ে খুশিকে প্রথমে আসানসোলে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান অক্ষয়-রূপারা। ইএসআই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকার দরুণ এইচএলজি হাসপাতালে আনেন মেয়েকে। সেখানে বিকেল ৩টে ৫৮ মিনিট নাগাদ খুশিকে ভর্তি করা হয়। এরপর সন্ধে ৭টা নাগাদ হঠাৎই মেয়ের অবস্থা ভাল নয় বলে অক্ষয়কে ফোনে জানান তাঁর স্ত্রী রূপা। হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মেয়ের শরীর ফুলে গেছে এবং গায়ে র্যাশ বেরিয়েছে। রূপার অভিযোগ একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই মেয়ের শরীর ফুলে যায় ও র্যাশ বেরিয়ে যায়। এরপর মেয়েকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানেই বড়সড় ধন্দের মুখে পড়ে যান অক্ষয়রা। মেয়েকে মৃত অবস্থাতেই আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ অক্ষয়দের। রাত ১০টা ০৫ মিনিটে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয় খুশির পরিবারকে। নিউমোনিয়ায় খুশির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে। যদিও অক্ষয়ের দাবি, মেডিকেয়ারে মেয়ের এক্স-রে রিপোর্টে নিউমোনিয়ার কোনও লক্ষ্মণের কথা উল্লেখ নেই। শুধু তাই নয়, ওই হাসপাতালে চিকিৎসক অমিত মণ্ডলের অধীনে খুশিকে ভরতি করা হলেও একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান মেয়ের চিকিৎসা করেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন অক্ষয়।