আসানসোলের হাসপাতালে শিশুকন্যা খুশির অকালমৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা-মায়ের প্রতিবাদের সুর ক্রমশ চড়া হচ্ছে। চিকিৎসায় গাফিলতিতে ৬ মাসের মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে গত ২৪ মার্চ থেকে টানা ধরনায় বসে আছেন খুশির বাবা-মা। গত ১৩ এপ্রিল একদিনের অনশনেও বসেন অক্ষয় কুমার ঘোষ ও রূপা ঘোষ। এবার মেয়ের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবিতে আরও বড় আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছেন অক্ষয়-রূপারা। আজ থেকে আমরণ অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আই ই বাংলাকে ফোনে খুশির বাবা অক্ষয় কুমার ঘোষ তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
সোমবারের মৌন মিছিলে শামিল কচিকাঁচারাও। (ছবি পরিবার সূত্র)।
অন্যদিকে, সোমবার আসানসোলে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মৌন মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন অক্ষয়-রূপারা। সে মিছিলে খুশির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হেঁটেছেন প্রায় হাজারখানেক সাধারণ মানুষ। সন্ধে ৬টা ২০ মিনিট নাগাদ এইচএলজি হাসপাতালের গেট থেকে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবন পর্যন্ত মিছিল যায় বলে আই ই বাংলাকে জানিয়েছেন অক্ষয় কুমার ঘোষ।
আরও পড়ুন,EXCLUSIVE: ফের চিকিৎসায় গাফিলতি! অকালমৃত্যু খুশির, আসানসোলে টানা ধরনায় বাবা-মা
ছোট্ট খুশির মৃত্যুতে এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এখনও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন খুশির বাবা। আই ই বাংলাকে ফোনে অক্ষয় কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও প্রশাসনের তরফে কোনও সদুত্তর পাইনি’’। যদিও খুশির বাবা-মাকে প্রশাসনের উপর ভরসা রাখার বার্তা দিয়েছেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এমনকি দোষ প্রমাণ হলে যে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে কথা আই ই বাংলাকে জানিয়েছেন মেয়র।
গত ২০ মার্চ জ্বর হওয়ায় ৬ মাসের মেয়ে খুশিকে প্রথমে আসানসোলে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান অক্ষয়-রূপারা। ইএসআই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় এইচএলজি হাসপাতালে আনেন মেয়েকে। সেখানে বিকেল ৩টে ৫৮ মিনিট নাগাদ খুশিকে ভরতি করা হয়। এরপর সন্ধে ৭টা নাগাদ হঠাৎই মেয়ের অবস্থা ভাল নয় বলে অক্ষয়কে ফোনে জানান তাঁর স্ত্রী রূপা। হাসপাতালে গিয়ে অক্ষয় দেখেন মেয়ের শরীর ফুলে গেছে, গায়ে র্যাশ বেরিয়ে গেছে। রূপার অভিযোগ, একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই মেয়ের শরীর ফুলে যায় ও র্যাশ বেরিয়ে যায়। এরপর মেয়েকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানেই বড়সড় ধন্দের মুখে পড়ে যান অক্ষয়রা। মেয়েকে মৃত অবস্থাতেই আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ অক্ষয়দের। রাত ১০টা ০৫ মিনিটে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয় খুশির পরিবারকে। নিউমোনিয়ায় খুশির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে। যদিও অক্ষয়ের দাবি, মেডিকেয়ারে মেয়ের এক্স-রে রিপোর্টে নিউমোনিয়ার কোনও লক্ষণের কথা উল্লেখ নেই। শুধু তাই নয়, ওই হাসপাতালে চিকিৎসক অমিত মণ্ডলের অধীনে খুশিকে ভরতি করা হলেও একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান মেয়ের চিকিৎসা করেন বলে জানিয়েছেন অক্ষয়।