ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসার অনুমতি মেলেনি বিজেপির। কিন্তু অনুমতি না নিয়েই শুক্রবার ধর্নায় বসে গেলেন সিপিএমের বিধায়ক ও শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শুধু শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের দাবি আদায়ের জন্য এই ধর্না নয়, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থও হবেন তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এদিন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাপ্য নিয়ে আলোচন করেছেন বর্তমান পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে। বিকেলে তিনি কথা বলবেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গেও।
৩ ফেব্রুয়ারি মেট্রো চ্যানেলে মঞ্চ বেঁধে ধর্নায় বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআই কেন গিয়েছিল, মূলত সেই প্রশ্ন তুলেই ধর্নায় বসেছিলেন মমতা। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিলং-এ সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে রাজীব কুমারকে। এদিন সে প্রসঙ্গও তোলেন শিলিগুড়ির মেয়র। ধর্নায় বসে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, 'আমাদের ধর্নায় বসার কোনও অনুমতি দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু, শিলিগুড়ি পুরসভার বাসিন্দাদের দাবি আদায়ের জন্য এছাড়া কোনও পথ ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী একজন আইপিএস-কে বাঁচানোর জন্য এখানে ধর্নায় বসেছিলেন। আমি ধরনায় বসেছি সাধারণ মানুষের জন্য।'
কিন্তু যদি আপনাদের দাবি না মেটানো হয়, তখন কী করবেন? শিলিগুড়ির মেয়রের সাফ কথা, 'প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে হবে। তাছাড়া আদালতের দরজা তো খোলাই রয়েছে। বামেদের পুরসভা বলেই এভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে শিলিগুড়িকে। কিন্তু এটা মনে রাখা দরকার, কলকাতার পর শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের গুরুত্বই সর্বাধিক।
কেন এই বঞ্চনা?
অশোকবাবুর বক্তব্য, 'নির্বাচনে জিততে না পারলেও প্রথম থেকেই শিলিগুড়ি পুরসভা দখলের অপচেষ্টা করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোনওভাবেই কাউন্সিলরদের প্রলোভন বা ভয় দেখিয়ে দলবদল করানো যাচ্ছে না। তাই, বঞ্চিত করা হচ্ছে শিলিগুড়ি পুরসভাকে। আর এর ফল ভুগতে হচ্ছে পুরসভার বাসিন্দাদের। কিন্তু, কেন এভাবে জোর করে পুরসভা দখল করার প্রচেষ্টা করা হবে?' প্রশ্ন তুলেছেন এই মুহূর্তে রাজ্যের একমাত্র বামপরিচালিত কর্পোরেশনের মেয়র।
কীভাবে এই বঞ্চনা?
এই বঞ্চনার কথা জানানোর জন্য শিলিগুড়ি পুর কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মেয়র জানান, গত চার বছর ধরে রাজ্য সরকার শিলিগুড়ি পুরসভাকে তৃতীয় রাজ্য় অর্থ কমিশনের কোনও অর্থ দিচ্ছে না। ছয় কিস্তির ৩০ কোটি টাকা বাকি। সকলের জন্য গৃহনির্মান খাতে ২৮ কোটি টাকা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বরাদ্দ করলেও রাজ্য দিয়েছে মাত্র ৬.৬৯ কোটি টাকা। মেয়র জানিয়েছেন, এভাবে সমস্ত প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের কাছে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা পাওনা জমে রয়েছে শিলিগুড়ি পুরসভার।