কলকাতা পুরসভার ধাঁচে শিলিগুড়িতেও প্রশাসনিক বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। তবে প্রশাসনিক বোর্ডে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের সঙ্গে কাজ করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর স্পষ্ট দাবি, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই নতুন প্রশাসনিক বোর্ডকে স্বাগত জানিয়েছে।
শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৭ মে। ফলে যথারীতি অন্য পুরসভার মতো এখানেও প্রশাসনিক বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। করোনা পরিস্থিতির জন্য রাজ্যের সমস্ত পুরসভার ভোট এখন স্খগিত। তবে শিলিগুড়িতে যে প্রশাসনিক বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে সেখানে বর্তমান মেয়র ছাড়া সিপিএমের ৬জন মেয়র পারিষদ রয়েছেন। অন্যদিক, তৃণমূল কংগ্রেসর ৫ কাউন্সিলরও রয়েছেন ওই বোর্ডে। আর এখানেই ঘোর আপত্তি নয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্যের। এই প্রশাসনিক বোর্ডে রয়েছেন সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য, রামভজন মাহাতো, কমল আগরওয়াল, শঙ্কর ঘোষ, শরদিন্দু চক্রবর্তী, মুন্সী নুরুল ইসলাম ও মুকুল সেনগুপ্ত। আর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আছেন রঞ্জন সরকার, নান্টু পাল, রঞ্জন শীলশর্মা, দুলাল দত্ত ও নিখিল সাহানী।
তৃণমূল কাউন্সিলরদের প্রশাসনিক বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করায় বেজায় ক্ষুব্ধ অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর স্পষ্ট কথা, “আমি এই প্রশাসনিক বোর্ডের দায়িত্ব নিচ্ছি না”। অশোকবাবু আরও বলেন, "প্রথম দিন থেকেই আমার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে রাজ্য। শেষ দিন পর্যন্ত একই মনোভাব দেখিয়ে গেল। আমি সিপিআইএম বা বামপন্থী বলে কি এই মনোভাব? আমরা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। আমি দাবি করেছি, এই ধরনের একপেশে এবং ব্যতিক্রমী অর্ডার প্রত্যাহার করতে হবে। এই অর্ডার প্রত্যাহার করলে তারপর যা করার আমি করব। এতে শিলিগুড়ির মানুষের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- কলকাতা পুরনিগম প্রশাসনিক বোর্ড সংঘাত, মুখ্যমন্ত্রীকে সংবিধানের কর্তব্য স্মরণ করালেন ধনকড়
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের পুরসভাগুলির ভোট স্থগিত হয়ে গিয়েছে। অশোক ভট্টাচার্যর বক্তব্য, "অন্য পুরসভাগুলির ক্ষেত্রে যা হয়েছে শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে কেন অন্যরকম হবে? এটা কি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে? কলকাতা, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে করল না। কেন শিলিগুড়ির বেলায় করা হবে? তণমূলের কাউন্সিলরদের গত ৫ বছরে কোনও অবদান নেই। ওদের সঙ্গে কাজ করা যায় না।"
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি ও পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার অশোকবাবুর এই প্রতিবাদে রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন। অশোকবাবুদের সঙ্গে কাজ করতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রশাসনিক বোর্ডকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেছেন, তাঁরা সবরকম সাহায্য করেবন। রঞ্জন সরকার বলেন, "সরকারের কাছে অশোক ভট্টাচার্য আবেদন করেছিলেন তাঁদের পারিষদদের রাখা হোক। সরকার সেই মতো তাঁকে ও মেয়র পারিষদদের রেখেছে। সরকার মনে করেছে আরও কিছু মানুষকে রাখা প্রয়োজন, তাই আমাদের পাঁচ জনকে রেখেছে। আইন অনুযায়ী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা তো কোনও দলের বিষয় নয়। প্রশাসনিক মন্ডলী রাজ্য সরকারের নমিনি। শিলিগুড়ি এখন রাজ্য সরকার মনোনীত প্রশাসনিক মন্ডলী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। সেখানে রাজনীতির কোনও বিষয় দেখা হয়নি। বরং অশোকবাবুকে চেয়ারম্যান করে সম্মান জানিয়েছে সরকার।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন